en
বৃহস্পতিবার , ১৪ এপ্রিল ২০২২ | ২৪শে পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আর্ন্তজাতিক
  6. এক্সক্লুসিভ
  7. খেলাধুলা
  8. ছবিঘর
  9. জন দুর্ভোগ
  10. জাতীয়
  11. টপ লিড
  12. বিনোদন
  13. মহানগর
  14. রাজনীতি
  15. লিড

আজ পহেলা বৈশাখ

প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ
এপ্রিল ১৪, ২০২২ ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
PicsArt 04 14 10.51.55

নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: আজ পহেলা বৈশাখ। সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে আজ এসেছে নতুন বছর, বঙ্গাব্দ ১৪২৯। নব আনন্দে জেগে ওঠার দিন আজ, করোনা মহামারির তাণ্ডবে গত দুই বছর বন্ধ ছিল বৈশাখ উদযাপন। এ বছর তাই নতুন উদ্যমে বর্ষবরণ করছে পুরো জাতি।

এ দেশের মানুষ নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার এক নতুন ধারার জন্ম দিয়েছে। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান যেমন পাকিস্তান আমলে এক দ্রোহ থেকে জন্ম নিয়েছিল, মঙ্গল শোভাযাত্রাও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদ জানিয়ে শুরু হয়েছিল। এরপর দেশে রাজনৈতিক নানা পটপরিবর্তন হয়েছে। তবে, এ দুটি আয়োজন সব সময় মানুষকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শপথ নেওয়ার প্রত্যয় জুগিয়েছে।


বর্তমান প্রেক্ষাপটে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসবে। পহেলা বৈশাখের ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর আয়োজনে মেতে ওঠে সারাদেশ। ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। আজ দেশজুড়ে নানা অনুষ্ঠানে গানে গানে, আনন্দ আয়োজনে নতুন বছরটিকে বরণ করে নিচ্ছে বাংলার মানুষ। সবার কণ্ঠে—‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। নববর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।

রাজধানীতে প্রতি বছর ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন। আজ সবার ঠিকানা হয়ে উঠছে রমনা বটমূলসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, বাংলা একাডেমি, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর এলাকা। ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভোর সোয়া ৬টায় শুরু হয়েছে বর্ষবরণের আয়োজন। ছায়ানট এ বছর ‘নব আনন্দে জাগো’ এ স্লোগানে বর্ষবরণ উদযাপন করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয় সকাল ৯টায়। নতুন অঙ্গীকার ও উত্সাহের মধ্য দিয়ে পালিত হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের স্লোগান ছি— ‘নির্মল কর মঙ্গল কর মলিন মর্ম মুছায়ে’। মেট্রোরেল নির্মাণকাজের জন্য এ বছর মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে শুরু করে উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে আবার টিএসসিতে ফিরে আসে।

শুধু ঢাকা নয় এখন সারাদেশেই ছায়ানটের আদলে গানের আয়োজন এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। আজ সরকারি ছুটি। বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদযাপন রাজধানী এবং দেশজুড়ে রয়েছে বর্ষবরণের নানা আয়োজন।

‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৯’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। দিনটি উদযাপন করতে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি সকাল ৮টায় নববর্ষ বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে, বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) কর্তৃক বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এদিকে, বেলা ২টার মধ্যে শাহবাগ বৈশাখের সব অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।

মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথম দিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। রাজস্ব আদায়ের সুবিধার জন্য সম্রাট আকবরের যুগে বৈশাখ থেকে প্রবর্তন হয়েছিল বাংলা সালের। বর্ষ শুরুর সেই দিনটিই এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব। বাদশাহ আকবরের নবরত্ন সভার আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজি বাদশাহি খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য ফসলি সালের শুরু করেছিলেন হিজরি চান্দ্রবর্ষকে বাংলা সালের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেছিলেন ও পহেলা বৈশাখ থেকে বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেছিলেন। আর বৈশাখ নামটি নেওয়া হয়েছিল নক্ষত্র ‘বিশাখা’র নাম থেকে। বিশাখা থেকে নাম হলো বৈশাখ। পয়লা বৈশাখের দিনে উৎসবের শুরুটাও সেই আকবর আমলেই। এ দিনে তিনি মিলিত হতেন প্রজাদের সঙ্গে। সবার শুভ কামনা করে চারদিকে বিতরণ করা হতো মিষ্টি। এরপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমলে বর্ষবরণ উৎসব চলে আসে জমিদার বাড়ির আঙিনায়। খাজনা আদায়ের মতো একটি রসহীন বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় গান বাজনা, মেলা আর হালখাতার অনুষ্ঠান। আজ আর খাজনা আদায় নেই। তবে ‘হালখাতা’ রয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী মহলে ‘হালখাতা’ অনুষ্ঠান মানে নতুন অর্থবছরের হিসাব খোলা। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে নতুন একটি ‘লাল কভারের’ খাতায় হিসাব খুলে নতুন উদ্যমে শুরু করা হয় ব্যবসা। সেখানে অতীতের ভুল ভ্রান্তিগুলো পর্যালোচনা করা হয়। হালখাতা থেকে নেওয়া হয় নতুন পরিকল্পনা ও কর্মসূচি।

সর্বশেষ - লিড