নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বন্দর থানা এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সাথে এমপি সেলিম ওসমানের মতবিনিময় আগামীতে কেন আবারো সেলিম ওসমানকে প্রয়োজন সেই কারন গুলো উল্লেখ করে ছিলেন কাউন্সিলরবৃন্দরা। বন্দরে সুরুজ্জামান টাওয়ারে এমপি সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ২নভেম্বর রোববার উক্ত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়ে ছিল।
সভাটির পর দিন সোমবার ৩ নভেম্বর বিকেল ৪টায় চাষাঢ়া হীরা মহলে অপর একটি সভায় শহরের কাউন্সিলররাও জানালেন আগামীতে কেন সেলিম ওসমানকে প্রয়োজন।
কাউন্সিলররা বলেছেন, সেলিম ওসমান এমপি হয়ে ছিল বলেই নারায়ণগঞ্জ আজ সন্ত্রাস মুক্ত, কাউকে চাদাঁ দেওয়া ছাড়া ব্যবসায়ী শান্তিপূর্ন ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছে। অতীতে যদি কারো মনে কোন প্রকার কষ্ট থেকে থাকে। তাহলে সেই কষ্টকে দূরে ঠেলে সবাইকে একত্রিত হয়ে সেলিম ওসমানের পক্ষে কাজ করে আগামী নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।
অপরদিকে সভায় এমপি সেলিম ওসমান শহরের উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনের সকল কাউন্সিলদের পরিকল্পনা গুলো একত্রিত করে মেয়রের কাছে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন।
সেলিম ওসমান বলেন, যেদিন থেকে ফজর নামাজের সময় জুম্মা নামাজের মত মসজিদ পরিপূর্ণ হবে সেদিন থেকে নারায়ণগঞ্জে কোন অশান্তি থাকবে না। নারায়ণগঞ্জ হবে শান্তিময় শহর। আর এ শহরের উন্নয়ন হবে সব থেকে বেশি।
তিনি আরো বলেন, বন্দর থানায় সিটি কপোরেশনের সকল কাউন্সিলদের সাথে মত বিনিময় করেছি। আজকে শহরে কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কবির হোসেন এসেছে। মাত্র ২জন কাউন্সিলর আসেননি। যার মধ্যে একজন মনোনয়ন জমা দিয়ে ছিলেন কিন্তু বাতিল হয়েছে। আরেকজন হচ্ছেন কাউন্সিলর অসিত বরুন বিশ্বাস। আশা করি ভবিষ্যতে উনারা দুজনেও আসবেন। প্রত্যেক জন কাউন্সিলের মাথায় নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনা আছে। সবার সাথে পৃথক ভাবে আলোচনা করে সবার পরিকল্পনা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে যাবো দেখবো উনি কিভাবে কাজ না করে পারে।
বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর তাদের পরিবারের দু:সময়ের স্মৃতি তুলে ধরে সেলিম ওসমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমাদের পরিবারকে নি:স্ব করে দেওয়া হয়। বাবা জেলে, বড় ভাই বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে ঘর ছাড়া। আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়। মাত্র ৩৭ হাজার টাকার জন্য আমাদের পৈত্রিক বাড়ি হীরা মহল নিলামে তোলা হয়। বাড়িটি মুক্ত করতে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন শফি হোসেন খাঁন, এরপর আসেন আমার আলী আহম্মদ চুনকা চাচা। উনি ইচ্ছে করলে একাই ওই টাকাটা দিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু উনি বলেছেন নারায়ণগঞ্জের সবাই মিলে আমরা এটা শোধ করবো। দেওভোগ এলাকার আমিনুল চাচা রাতের অন্ধকারে আমাদের বাসার সামনে চালের বস্তা ফেল যেত। যেটি তখন আমাদের খুবই উপকারে এসেছে। এমন কষ্টের সময় আমাদের পরিবারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। কিন্তু অতীতে কষ্ট নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। অতীতের কষ্ট দূরে ঠেলে নতুন দিনে সম্ভাবনায় সকলে মিলে কাজ করে যেতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন বলেছেন, আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। নৌকা বা লাঙ্গল কোন বিষয় না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেলিম ওসমানকে মনোনীত করেছেন। তাই আগামীতে আবারো সেলিম ওসমানকে নির্বাচিত করতে হবে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও আবারো বিজয়ী করতে আমাদের যা যা করনীয় তার সব করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেছেন, বাংলাদেশে অনেক এমপিই লুটপাট করে খায়। কিন্তু আমরা নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের মত সংসদ সদস্য পেয়েছি। সেলিম ওসমান নিজের পকেটের টাকা দিয়ে এলাকার উন্নয়ন করেছেন। এছাড়াও উনার মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব। তাই আগামীতে উনাকে আবারো বিজয়ী করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল বলেছেন, সেলিম ওসমানই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নারায়ণগঞ্জে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী সহ সবাইকে উন্নয়নের অংশীদার করেছেন। নিজ তহবিল থেকে নারায়ণগঞ্জ-বন্দরে স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়ন করেছেন। নিজের টাকায় ঈদের সময় অসহায় মানুষের হাতে ঈদ সামগ্রী তুলে দিয়েছেন। কিন্তু তিনি জাতীয় পার্টির এমপি হলেও কাজ করার সময় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি বিবেচনা করেননি। সেলিম ওসমান এমপি হয়েছিল বলেই নারায়ণগঞ্জ আজ সন্ত্রাসী মুক্ত, ব্যবসা করতে কাউকে চাদাঁ দিতে হয়না। উনি এমপি হয়ে ছিল বলেই আমরা আজ সুশিক্ষা পাচ্ছি। আগামী নির্বাচনে আমরা আবারো সেলিম ওসমানকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে সবাই উনার উন্নয়নের অংশীদার হবো।
সিটি কর্পোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফি উদ্দিন প্রধান বলেছেন, আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি বাংলাদেশের ৩০০টি আসনের মধ্যে আর একজনও সেলিম ওসমানের মত এমপি নাই। আপনাদের মনে যদি কোন কষ্ট থাকে তাহলে অতীতের সকল কষ্ট ভুলে গিয়ে আপনি নিজেই প্রার্থী হয়েছেন মনে করে সবাইকে একত্রিত করে আগামী নির্বাচনে সেলিম ওসমানকে বিজয়ী করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু বলেছেন, দল যার যার সেলিম ওসমান সবার। আমি বিএনপি একটি দলের রাজনীতি করি। ওই দলের মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক। তারপরেও আমি উনার জন্য এসেছি। সর্ব প্রথম ২০০৩ সালে উনার কাছে গিয়ে ছিলাম। উনি আমাকে প্রশ্ন করে ছিলেন তুই ভাল হবি কিনা? আমি বলে ছিলাম ভাল হয়ে যাবো। এরপর আমাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। টানা ৩বার এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। আমার ওয়ার্ডে তিনি নিজ তহবিল থেকে প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার উন্নয়ন করেছেন। যেখানে সুপেয় বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা, রাস্তায় এলইডি লাইট, ওয়াইফাই জোনে, এলাকার নিরাপত্তায় সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, ৪টি মসজিদের উন্নয়নে অর্থায়ন করেছেন। যাকে দিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে তাকেই আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করতে না পারলে ক্ষতি আমাদেরই হবে।
সভায় জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কবির হোসেন, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, ১৩নং ওয়ার্ড এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জমশের আলী ঝন্টু উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে একই স্থানে সন্ধ্যা ৭টায় নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন এমপি সেলিম ওসমান। সভায় হিন্দু নেতৃবৃন্দরা আগামী নির্বাচনে সেলিম ওসমানকে বিজয়ী করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে বলেন। নৌকা লাঙ্গল বুঝিনা আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা যাকে প্রার্থী দিবেন আমরা সবাই তাকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবো।