নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, যখন লিংকরোড দিয়ে ঢুকছিলাম সেখানে দেখলাম এত কষ্ট করে আমরা একটা রাস্তা বানাচ্ছি। বিশাল রাস্তা হচ্ছে, এটা বাংলাদেশের ওয়ান অফ দ্য বেস্ট রাস্তা হবে। সেই রাস্তায় বিজিবি ক্যাম্পের অপজিটে আগেও ময়লা ফেলা হত। এখানে আছেন পরিবেশের নেতা, আমাকে পছন্দ করেন কিনা জানি না।
তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বার্তা বলেন। আমি দেখলাম সেখানে ড্রেন হয়েছে পানি যাওয়ার জন্য। এখন যেহেতু ড্রেন হয়েছে সেখানে যে পরিমাণ ময়লা ফেলা হয়। পরবর্তীতে যখন রাস্তাটা চালু হবে এই ময়লাগুলো এখনই ড্রেনে ঢুকছে। একসময় পানি পাস হতে পারবে না। ভুগবে কে? নারায়ণগঞ্জের মানুষ। এই প্রশ্নটা কেউ করে না কেন, দেখে না কেন। আমার মনে হয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত। আল্টিমেটলি গালিটা আমরাই খাই।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে নগরীর চাষাঢ়া টাউন হলে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, এই রাস্তার পাড়ে মরা গরুও পড়ে থাকে। মানুষ এসব দেখে, প্রশ্ন করে। কেউ যদি দেখে রাস্তার পাশ থেকে কেউ কারও কাছ থেকে টাকা তোলে। তারা প্রশ্ন করে। আমি নিজে সেদিন দেখে গাড়ি থেকে নেমেছি। দেখি কে যেন কার চাকা ফুটো করছে। জিজ্ঞেস করলাম কেন করা হচ্ছে, বলে পয়সার জন্য। রাস্তার পাশে হকার বসে কাউকে না কাউকে পয়সা দিয়ে বসে। কে পায় আমি জানি না। গরিব মানুষরা দেয় কিন্তু। তারা দেয় মারও খায়। মীর জুমলা রোড আজ বন্ধ। চৌকি প্রতি টাকা নেয়। কারা নেয় এ টাকা। কেন ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ থাকবে। রাজনীতি করতে এসে সত্য কথা যদি বলতে না পারি রাজনীতি করব কেন। কেউ যদি সত্য বলতে না পারেন চুপ থাকেন। সাংবাদিকরা লেখেন না কেন। এটা আপনার এলাকা আপনার দেশ।
তিনি আরও বলেন, লিংকরোড থেকে যতক্ষণ এখানে আসতে লাগল তা লাগার কথা না। অনিয়মটাই নিয়ম হয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিষয়টা দেখা উচিত। সারা বিশ্বে আমার মনে হয় আমরা কঠিন একটা সময় পার করতে যাচ্ছি। আজকে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এর কারণে আমরা উঠতি দেশ উন্নত দেশগুলোরই যখন ত্রাহি অবস্থা তখন শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন। এমন সময়েই একদল লোক বলছে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে, তারা কী খুশি। এটা হলে মানুষ হিসেবে তো খুশি হওয়া উচিত না। দেশটা ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব।
‘আমরা চাল উৎপাদন করি। হয়ত খাদ্যের সংকট হবে না। আমার ভাই ডেইরি পোল্ট্রি করে। গম ভুট্টা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন যদি গম না পাই গম ভুট্টার মূল্য যদি বেড়ে যায় এর প্রভাবে গরুর দুধ, ডিম, মাছ, মাংসের দাম বাড়বে। আমাদের এখন এক খণ্ড জমি ফেলে রাখার সময় না। কোন জিনিস অপচয় করার সময় না। বিনা কারণে এক মিনিটও লাইট জ্বালানোর দরকার নেই। সবকিছু আমাদের সেভ করতে হবে। ‘
তিনি বলেন, জার্মানে চেম্বার অব কমার্সের লোকজনদের জিজ্ঞেস করলাম তোমরা বিশ্বযুদ্ধের পরেও নিজেদের উঠিয়ে নিয়ে আসলে কেমন করে। সে বলল আমরা যুদ্ধের পর যখন ক্ষতবিক্ষত তখন ঠিক করেছিলাম দুটো রুটির জায়গায় একটা রুটি খাবো। আরেকটা রুটি পরবর্তী জেনারেশনের জন্য সেভ করে রাখব। সেই জার্মান আজ ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। আমি মনে করি আমাদেরও এটা চিন্তা করতে হবে। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো অবস্থানে আছি। এর মেইন সোলজার হবে ইয়াং জেনারেশন যারা সকল আন্দোলন করেছে। তাদেরই করতে হবে। কারণ তারাই এখন যোদ্ধা।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ করার দরকার নেই। বাবা, মা ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করুন। সাড়ে চার কোটি তরুণ যদি একটি করে ভালো কাজ করেন তাহলে এ দেশকে কেউ রুখতে পারবে না।
‘আমি সেদিন ডেমরা দিয়ে যাচ্ছিলাম। প্রায় বিশ কিলোমিটার লম্বা লাইন। গাড়ি থামিয়ে দেখলাম টোকেন দিচ্ছে। একজন মহিলা দেশটাকে দাঁড় করানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন আরেজন এখানে টোকেন তুলছেন। আমরা হলে, আমাদের বিরুদ্ধে যান আওয়াজ তুলুন। কে কোন দল করেন সেটা বড় না কে ভাল মানুষ সেটা বড় কথা। ‘
শামীম ওসমান বলেন, একসময় এই শীতলক্ষ্যার পানি খেয়েছি এত পরিষ্কার ছিল। আজ এ পানিতে মাছ কেন সাপও হয় না। আমরাই এগুলো নষ্ট করেছি। আমাদের চেঞ্জ করতে হবে এটা। আজ দুবাইয়ে গিয়ে দেখেন কীভাবে গ্রিন দুবাই হয়ে গেছে। আমরা তাহলে এমন হয়ে যাব কেন। এখন অনেকেই ছাদে গাছ লাগায়। এ গাছ কিন্তু ফলন দেয়। এটা আপনাকে অনেক কিছুই রিটার্ন দিবে।