ডেস্ক রিপোর্ট : বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়িয়েছে, সে অভিজ্ঞতা থেকে চলতি এপ্রিল মাসটি বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে কারণে এই মাসে সবাইকে সর্বাত্মক সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য দেশ থেকে আমরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি, তাতে আমাদের দেশেও এপ্রিল মাসে বড় একটি ধাক্কা আসতে পারে। এরকমই আলামত পাওয়া যাচ্ছে। এপ্রিল মাসটি নিয়ে খুব চিন্তাই আছি। কাজেই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। দুই বিভাগের ১৫টি জেলার জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তারা এতে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের গতি যখন অব্যাহত, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যখন কাজ করে যাচ্ছি, ঠিক তখনই এলো করোনাভাইরাস। সারাবিশ্বে এটি প্রলয় সৃষ্টি করেছে। সবকিছু স্থবির হয়েছে পড়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশেও এসে পড়েছে। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ সমগ্র বিশ্বের প্রায় ২০২টি দেশ আজ ভুক্তভোগী। প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বাড়ছে। সেই অবস্থায় আমরা শুরু থেকে চেষ্টা করেছি যেন এর প্রভাবে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তবে সারাবিশ্বে যেভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, সেটা অনেকটা অঙ্কের মতো।
এপ্রিল মাসকে বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকি অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের এমনভাবে চলতে হবে যেন এর প্রভাবে আমাদের দেশের মানুষের ক্ষতি কম হয়। তবে এটা ঠিক যে একটি স্থবিরতা এসে গেছে। অর্থনৈতিক, সামাজিক সব ক্ষেত্রেই এসেছে। এর ফলে অর্থনৈতিক যে গতিশীলতা আমরা তৈরি করেছিলাম, সেটাও কিন্তু থেমে গেছে। সেটা কেবল আমাদের দেশে না, সারাবিশ্বেই ঘটেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই প্রবাসী বাঙালিরা মারা গেছেন। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনাও জানান তিনি।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে ফের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা বেশি। এটি ভালো খবর। কিন্তু আমরা চাই না এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাক। আমরা এটাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চাই। আর তার জন্য নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং সবাইকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, এপ্রিল মাসটা নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। তবে ইনশাল্লাহ, এই অবস্থাও আমরা মোকাবিলা করতে পারব। আমরা এরকম দুর্যোগ আগেও মোকাবিলা করেছি, আমরা এ দুর্যোগও মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।
এ অবস্থায় সবার করণীয় জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে বলব, কেউ লুকাতে যাবেন না। সুরক্ষিত থাকুন। কোনো ধরনের অসুস্থতা মনে হলে, করোনার লক্ষণ মনে হলে ডাক্তারের কাছে যাবেন। চিকিৎসা নিন, দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন।
সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পুরস্কার
করোনা প্রতিরোধে নিয়োজিতরা আক্রান্ত হলে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার বিমা ।