নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
দেশের অন্যতম স্বনামধন্য ব্যবসায়িক গ্রুপ পারটেক্স গ্রপের প্রতিষ্ঠাতা, বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এমএ হাশেমের ছেলে ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক শওকত আজিজ রাসেল (৩৯) এর গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক ও অস্ত্রের গুলি উদ্ধার করেছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এছাড়া শওকত আজিজ রাসেল রাজধানীর অভিজাত ক্লাব গুলশান ক্লাবের সভাপতি। এ ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে শওকত আজিজ রাসেলকে প্রধান আসামি করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে শুক্রবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় চৌরঙ্গী ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে একটি গাড়ী (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৮৩৭৫) আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় মাদক ২৮ রাউন্ড গুলি, ১২শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশী মদ, ২৮ ক্যান বিয়ার, নগদ ২২ হাজার ৩৮০ টাকাসহ গাড়িতে থাকা শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল (৩০), ছেলে আনাব আজিজ (১৯) ও গাড়ি চালক সুমন (২৯) কে আটক করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ জানান, জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে ঢাকার বাসায় নামিয়ে দেওয়ার পর গাড়ি নিয়ে ফেরার সময় শুক্রবার দিবাগত আনুমানিক রাত ১টার দিকে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তায় মগবাজার ফ্লাইওভারের কাছাকাছি পৌছালে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়।
তখন এসপির গাড়ির চালক জুয়েল মিয়া হর্ণ দিলে গাড়ির সামনে থাকা (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৮৩৭৫) এর সাদা রঙের গাড়ির ভেতর থেকে একজন লোক এসে গাড়ির বাম পাশের গ্লাসে জোরে আঘাত করে গালিগালাজ করতে করতে বলেন ‘ আমি পারটেক্স রাসেল, গাড়ির দরজা খোল’। এমন কথা বললে এসপির গাড়ির চালক তখন গাড়ির গ্লাস খুলে প্রতিবাদ করলে উক্ত ব্যক্তি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় পিস্তল তাক করে ধরে। পরে পুলিশের লোক বুঝতে পেওে সে দ্রুত নিজের গাড়িতে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় এসপির গাড়ি চালক ও দেহরক্ষী গাড়িটি অনুসরণ কওে শুক্রবার রাত পৌনে তিনটার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড চৌরঙ্গী ফিলিং এন্ড সিএনজি ষ্টেশন থেকে শওকত আজিজের স্ত্রী, ছেলে ও ওই গাড়ির চালক সুমনকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তলের গুলি ও মাদক শওকত আজিজ রাসেলের নিশ্চিত করে জানিয়েছে গাড়ী চালক। আসামী এবং পলাতক আসামী একে অপরের সহযোগীতায় পরস্পর যোগসাজসে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে থাকে। মাদকদ্রব্য জব্দকৃত গাড়ী যোগে বহন করিয়া নিজ হেফাজতে রাখিয়া নিজেরা সেবন করে এবং সহযোগীদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আসর বসায়। মাদকদ্রব্য ও সুন্দরী রমনীদের নিয়া চলাফেলাসহ সুন্দরী রমনীদের দিয়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলিয়া ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করে।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি হারুন অর রশীদ জানান, অপরাধী সে যত বড় ক্ষমতাবানই হোক না কেনো অপরাধ করে সে পার পাবে না। প্রধান আসামী পলাতক রয়েছে। তাকে ধরার জন্য তার বাসা, গুলশান ও ঢাকার একটি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় শনিবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ছুটে আসেন পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এম এ হাশেম, পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমএ হাশেমের স্ত্রী সুলতানা হাশেম, এমডি আজিজ আল মাহমুদ। আটক শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজকে তাদের হেফাজতে ছেড়ে দেয়া হয়।