নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি বুঝি না আমি শুধু মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ৭১’র সাথে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ কোন দলের সাথে হয় নাই, হিন্দু বা মুসলমানের সাথে হয় নাই। যুদ্ধ হয়েছে বাঙ্গালী আর পাকিস্তানিদের সাথে। তাই একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি কোন দল দেখতে চাই না। শুধুই মানুষের কল্যানে কাজ করে যেতে চাই, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করতে চাই, যাতে করে ভবিষ্যতে আমার মত এইচ.এস.সি পাশ কাউকে যেন আর এমপি হতে না হয়। তিনি আহবান রেখে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমিও নারায়ণগঞ্জে ৫টি আসনেই নৌকার প্রার্থী চাই। প্রত্যাশা রাখি আগামীতে তাই হবে। আগামী ৫ বছর পর কাকে নৌকার প্রার্থী বানাবেন আপনারাই ঠিক করবেন।
রবিবার ( ৯ ডিসেম্বর ) সন্ধ্যা ৭টায় শহরের পাইকপাড়া এলাকায় অবস্থিত জয় গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ১৬ই মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উক্ত আলোচনা সভার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এমপি সেলিম ওসমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মনোনীত মহাজোট প্রার্থী। আগামী নির্বাচনে সেলিম ওসমানকে লাঙ্গল মার্কায় ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে জয়ী করে আগামী ১ জানুয়ারী আমরা নারায়ণগঞ্জে বিজয় মিছিল করতে চাই।
এমপি সেলিম ওসমান আরো বলেন, আমি কিছু গরীব মানুষের জন্য এই এলাকায় কিছু প্যাকেট দিয়েছি। এটাকে আপনরা বড় করে দেখছেন। কিন্তু এটা আমার কাজ নয়। এটা একজন মানুষ হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু আমার কাজ ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে। কিন্তু এই এলাকার মানুষও আমাকে ভোট দিয়েছে। আমি সেই ভাবে এই এলাকায় কাজ করতে পারি নাই। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কাজ করতে আমার হাত পা বাঁধা। তাই আপনাদের কাছে ক্ষমা ছাড়া আমার দ্বিতীয় কোন উপায় নাই। তবে আগামীতে যদি আমি নাও হতে পারি, আমার পদ থাকে বা না থাকে যেখানে আমার বাবা একে.এম শামসুজ্জোহা পড়ালেখা লেখা করেছেন সেই স্কুলে আমার রক্ত বিক্রি করে হলেও উন্নয়ন করবো। সেই সাথে শেখ হায়দার আলী পুতুল এবং আব্দুল কাদির এই দুজনকে আমি দুটি বিষয়ে কথা দিয়ে ছিলাম সেটিও আমি অবশ্যই বাস্তবায়ন করবো।
তিনি আরো বলেন, অনেকে আমার দেওয়া অনুদানের টাকার হিসেব করেন। কিন্তু কখনো কেউ এটা হিসেব করেন না কত টাকা আমার কাছ থেকে লুটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমার কারখানা দখল করা হয়েছে, বাড়িতে গুলি করা হয়েছে, নাটক সাজিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, চাষাঢ়ায় আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা মেরে আমার ভাইকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০ জন মানুষকে লাশ বানানো হয়েছে নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেদিন আমি কুরুক্ষেত্র দেখেছি। কিন্তু সাধ্য থাকার পরও আমি কাউকে কিছু বলি নাই কারো উপর কোন প্রতিশোধ নেই নাই। আমার শুধু একটাই আহবান অতীত নিয়ে ঝগড়া নয়। আসুন নতুনের জয়গান গাই, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কাজ করে তাদের হাতে বাংলাদেশের দায়িত্ব তুলে দেই।
১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সোহরাব হোসেন এর সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সাবেক সভাপতি খবির উদ্দিন আহম্মেদ, মুক্তিযোদ্ধা হাসান ভূইয়া, মুক্তিযোদ্ধা অলি উদ্দিন ভূইয়া, মুক্তিযোদ্ধা হাজী নুরুউদ্দিন, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি শেখ হায়দার আলী পুতুল, সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, প্রচার সম্পাদক খালিদ হাসান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি রবিউল হোসেন, আটা ময়দা মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মতিন মন্টু, ১৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আনিস উদ্দিন আহম্মেদ, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজুন, মহানগর যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক রিপন ভাওয়াল, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, যুবলীগ নেতা তাহের উদ্দিন সানি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা।