নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নৌপথে সত্তর বছর ধরে বন্ধ থাকা যোগাযোগব্যবস্থা নতুন করে চালু হওয়াকে ভারত-বাংলাদেশের নৌ চলাচলের পথে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের নৌপথে যাতায়াত ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে দুদেশের সম্পর্কে আরও সুদৃঢ় হবে। এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ভারতের পাশে সব সময় থাকবে ।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেল ৫টায় নারায়ণগঞ্জের পাগলা মেরিএন্ডারসনের ভিআইপি ঘাটে অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ক্রুজ শিপ ‘এমভি মধুমতি’ ফতুল্লার পাগলা থেকে কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাত ৯টায় এমভি মধুমতি ফতুল্লার পাগলা থেকে ভারতের কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করে। একইদিন একই সময়ে ভারতের ক্রুজ শিপ ‘মেসার্স আরভি বেঙ্গল গঙ্গা’ কলকাতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার কথা রয়েছে।
নৌপথে এ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়া আমাদের জাতীয় ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, ভারতের সাথে আমাদের আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। মনে হয় যেন ভাইয়ে ভাইয়ে এক গভীর সম্পর্ক । প্রতিবেশীর সাথে যে সম্পর্ক থাকে এটি এমন একটি সম্পর্ক। ভারত আমাদের বিপদের সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছিল।
মন্ত্রী জানান, নৌপথকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুড়িগঙ্গার পানি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা এজন্য কাজ করছি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ। এসময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, সদর ইউএনও নাহিদা বারিক, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত চুক্তির আওতায় পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ সেবা চালু হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে সফল হলে নিয়মিতভাবে এ নৌযান চলাচল করবে। ক্রুজ শিপ ‘এমভি মধুমতি’ পাগলা হতে বরিশাল, বাগেরহাটের মংলা, সুন্দরবন, খুলনার আন্টিহারা-ভারতের হলদিয়া রুট হয়ে হয়ে কলকাতায় যাবে। এ জন্য পরীক্ষামূলকভাবে সুন্দরবন, বরিশাল, চাঁদপুরের মতো আকর্ষণীয় এলাকার ওপর দিয়ে নৌযানগুলো ঘুরে যাবে।
চাঁদপুর হয়ে ৩০ মার্চ ভোরবেলা বরিশালে যাত্রা বিরতি করবে এমভি মধুমতি। সেখান থেকে বাগেরহাটের মংলায় কিছু সময় থামবে জাহাজটি। বাগেরহাট থেকে সুন্দরবন ঘুরে মধুমতি জাহাজটি খুলনার কয়রার আন্টিহারার দিকে যাবে। সেখানে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হবে। আন্টিহারা হয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় যাবে। হলদিয়া থেকে সরাসরি কলকাতা যাবে মধুমতি। সবশেষ গন্তব্য কলকাতা নৌবন্দরে পৌঁছাবে রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে। রোববার কলকাতায় থেকে পরদিন সোমবার (১ এপ্রিল) ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে এমভি মধুমতি।
এমভি মধুমতিতে যাত্রী ধারণক্ষমতা প্রায় ছয়শ জন। এর মধ্যে কেবিনগুলোতে ১৩০ জন যাত্রী ভ্রমণ করছেন। জাহাজে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা, রাতের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।। তবে এসব খাবার যাত্রীদের কিনে খেতে হবে।