নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সরঞ্জামের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির সহকারী কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন তিনি। পনের মিনিট পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে মনিরুল ইসলাম এ কথা জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোরে আটক ফরিদ উদ্দিন রুমি, জামাল উদ্দিন রফিক ও জান্নাতুল ফুয়ারা অনু জেএমবির সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, বসতবাড়ি থেকে আটকের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, একই এলাকায় তাদের আরেকটি পরিত্যক্ত টিনশেড বাড়িতে গোপনে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। পাশাপাশি বাড়িটিতে বোমা তৈরির ল্যাব আছে এবং ওইখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম মজুদ আছে।
পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই বাড়িতে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও রোবট পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণ করে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
মনিরুল ইসলাম আরও জানান, এর আগে রাজধানীতে পাঁচটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যেসব বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে এই অভিযানে একই আলামত মিলেছে। বাড়িতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল টিম এখনও পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বের হয়ে আসার পর অভিযান সমাপ্ত হলে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তক্কার মাঠ এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ি ঘিরে রাখে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও সোয়াত সদস্যরা। সোমবার মধ্যরাত থেকে বাড়িটি ঘিরে রেখেছে বলে গণমাধ্যমকে সকালে নিশ্চিত করেন ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আসলাম হোসেন।
পরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, এলাকার তক্কার মাঠ এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে জয়নাল আবেদীনের একটি টিনশেড বাড়ি ঘিরে রাখে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যদের সাথে জেলা পুলিশের সদস্যরাও সহযোগিতা করছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা জানান, ওই বাড়িটি থেকে এখন পর্যন্ত তিন জনকে আটক করে তাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের দুই ছেলে আহসান উল্লাহ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার ফরিদ উদ্দিন রুমি, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জামাল উদ্দিন রফিক ও রুমির স্ত্রী একটি সরকারি ব্যাংকেত কর্মকর্তা জান্নাতুল ফুয়ারা অনু।
আটকের পরে তাদের বাড়িটিতে কোনও বিস্ফোরক দ্রব্য বা এক্সক্লুসিভ জাতীয় কিছু থাকতে পারে এই সন্দেহে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয। পরে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে এসে রোবট প্রবেশ করিয়ে তাদের কাজ শুরু করে।
এদিকে দুপুর ১২ টা ৫৮ মিনিটে ওই বাড়ি থেকে একটি বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। এরপর দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে আরও একটি বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে বোমা বিশেষজ্ঞ দল ওই বাড়ির ভেতরে থাকা কোন বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে।