নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
মজুরী বৃদ্ধির দাবীতে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলাধীন ফতুল্লায় বিসিক শিল্প নগরীতে ফকির নীট ওয়্যার নামের একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভসহ বেশ কয়েকটি কারখানা ভাংচুর করেছে। এসময় পুলিশ বাঁধা দিলে পুলিশের সাথে শ্রমিকদের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিনত হয় বিসিক।
সোমবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানার ওসিসহ প্রায় অর্ধশত সাধারণ শ্রমিক আহত হয়েছে। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
পুলিশ ও শিল্প মালিকরা জানান, উৎপাদান মজুরী বৃদ্ধি নিয়ে ফকির নীটওয়্যার কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে গত তিনদিন ধরে অসন্তোষ চলছিল। মালিকপক্ষ মজুরী বৃদ্ধি করলেও দাবী অনুযায়ী বৃদ্ধি না হওয়ায় শ্রমিকরা রবিবার কারখানাটির অভ্যন্তরে বিক্ষোভ করে। এ অসন্তোষ নিরসনে কারখানাটির মালিকপক্ষ সোমবার সকালে বিসিক কর্তৃপক্ষ, বিকেএমইএ কর্তৃপক্ষ ও শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। তারা মঙ্গলবার বিভিন্ন কারাখানার মালিকদের সাথে আলোচনা করে তাদের সাথে উৎপাদন মজুরী সমন্বয় করার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে না নিয়ে বিসিকের অভ্যন্তরে বিক্ষোভ শুরু করে। এসময় তারা বিসিকসহ আশপাশের ২০ থেকে ২৫টি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।
শিল্প মালিকদের কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়িও ভাংচুর করে শ্রমিকরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা সহ বিপুল পরিমান পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। এতে শ্রমিকরা পুলিশের উপর ব্যাপক ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এসময় পুলিশ উত্তেজিত হয়ে বহিরাগতদের লাঠিচার্জ করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এরপর দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহাবুব উন নবী জানান, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য শ্রমিকদের বোঝাতে চেষ্টা করে। তবে শ্রমিকদের মধ্যে বহিরাগত শতাধিক যুবক মিলে গিয়ে পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ হামলা করে। তারা বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানা ও যানবাহন ভাংচুর করে। এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে বহিরাগতদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।