নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
ফতুল্লা মডেল থানার ভেতরে এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জামিন পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী ।
মঙ্গলবার ( ১৯ নভেম্বর ) সকালে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলেমের আদালত আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত মামলার পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগ পর্যন্ত জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ।
আসামিরা পক্ষের আইনজীবী এড. খোকন সাহা জানান, থানার ভেতরে এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী ও শাহীন মিয়ার পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন আদালত ।
গত রোববার ( ১৭ নভেম্বর ) দুপুরে মারধরের শিকার ব্যবসায়ী সেলিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মীর সোহেল ও তার সহযোগী শাহীন মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লার কুতুবপুরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরুর সন্ত্রাসী বাহিনী কুতুবপুর ইউনিয়নের বউবাজার এলাকায় মুরাদ হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মুরাদ বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন এবং পরদিন শুক্রবার রাতে তাদেরকে থানায় যেতে বলেন।
পুলিশের কথা অনুযায়ী অভিযোগকারী স্থানীয় ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন ও তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী সেলিম থানা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করার সময় মীর হোসেন আলী ও শাহীনসহ আরও বেশ কয়েকজনের দেখা হয়। মীর সোহেল আলী ও তার লোকজন সেলিমকে থানার ভেতরে দেখেই উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং শার্টের কলার চেপে ধরে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে মারতে মারতে থানা থেকে রাস্তায় নিয়ে আসে। আবার সেখান থেকে টেনে হেঁচড়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান রুমে নিয়ে যায়, থানার লকাবে ঢুকিয়ে দেয়ার কথা বলেন মীর সোহেল আলী। এ সময় ওসি তদন্ত হাসানের রুমে নেওয়ার পর তিনি আমাকে উল্টো ধমকাচ্ছিলেন আর বলছিলেন থানায় আপনার কাজ কি? কেন এসেছেন? এভাবে পরিদর্শক তদন্ত মীর সোহেল আলীর পক্ষ নিয়ে সেলিমকে শাসান।
এ বিষয়ে চাঁদ সিকদার সেলিম বলেন, এর আগে মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে আমার বড় ভাই মুরাদ হোসেন চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছিলো। এ বিষয়ে কথা বলতেই শুক্রবার থানায় গেলে আমাকে পেয়ে মীর সোহেল আলী ও তার লোকজন আমাকে থানার ভেতরে এলোপাথাড়ি মারধর ও হামলা চালায়।
তিনি বলেন, এভাবে থানার ভেতরই যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে বাইরে আমাদের নিরাপত্তা কতটুকু এবার বুঝে নেন। এদিকে এই ঘটনা গণমাধ্যমে আসলে প্রশাসনের তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কুতুবুপুরে এলাকাবাসী অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
এই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী সেলিম বাদী হয়ে রোববার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় মীর সোহেল ও তার সহযোগী শাহীন মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মীর সোহেল আলীর সাথে করা হলে তিনি জানান, মারধর নয়, বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে।