নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব। সোনারগাঁও এবং বন্দর উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আদি ব্রহ্মপুত্র নদে শুরু হচ্ছে এই অষ্টমী স্নানোৎসব।
ব্রহ্মপূত্রের জলে পাপমুক্ত করেছিল পরশুরাম মুনিকে। হিন্দু ধর্মলবম্বী লোকজন মনে করেন, মহা ভারতের বর্ণনা মতে পরশুরাম মুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপূত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দ অবস্থিত। সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে বহ্মপূত্র নদে স্নান খুবই পূণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে এ স্নানে অংশ নেওয়ার জন্য উপমহাদেশের এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন লাঙ্গলবন্দে। পাপমোচনের এ উৎসবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ এসে এখানে সমাবেত হয়। পরশুরামের পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার কথা স্মরণ করে শ’শ’ বছর ধরে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপূত্র নদে অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এ উপলক্ষে ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও স্নান উৎসব উদযাপন কমিটি সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। উৎসবে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকা থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তীর্থযাত্রী অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্নিষ্টরা। এ বছর তিথি অনুযায়ী স্নানের লগ্ন শুরু হবে শুক্রবার সকাল ১১টা ৫ মিনিটে। লগ্ন শেষ হবে পরদিন শনিবার সকাল ৮টা ৫৫ মিনিট ২২ সেকেন্ডে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এখানে স্নান করলে সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্নানে অংশগ্রহণের জন্য ব্রহ্মপুত্র নদের লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত রাজঘাটসহ মোট ১১টি ঘাট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সোনারগাঁয়ের কালীগঞ্জ ঘাটও স্নানের জন্য ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ঘাট ছাড়াও অন্যান্য স্থানও স্নানকার্যে ব্যবহার করা হবে। এ স্নান উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে মেঘনা ঘাট পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদাপণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানের দিক নির্দেশনায় আমরা বরাবরের মতো এবারেও লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব সফলভাবে আয়োজনের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছি । বন্দরের ইউএনও, এসিল্যান্ড, বন্দর থানার ওসি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিএ’র লোকজনসহ সকলকে সাথে নিয়ে ছোটখাটো যে সমস্যাগুলো রয়েছে তা সম্পন্ন করেছি ।
তিনি আরো বলেন, ২০১৫ সালে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নানের সময়ে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একেএম সেলিম ওসমানের দিক নির্দেশনায় আমরা পরবর্তীতে অত্যান্ত সফলভাবে এ আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। আর এ জন্য সকলের সর্বাত্মক সহযোগীতা কামনা করছি। সবার সহযোগিতা পেলে অতীতের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব আয়োজন করতে পারো বলে আশা রাখি।
কাঁচপুর হাইওয়ে পুলিশের ওসি কাউয়ুম আলী সরদার বলেন, স্নান উৎসবে আগত তীর্থযাত্রীদের চাপে মহাসড়কে যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় এ ব্যাপারে আমরা আগে থেকেই সতর্ক রয়েছি।