নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, জাতির বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আজকে সবার আগে স্মরণ করছি, স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধুর কথা। বাংলাদেশের কিছু মির্জাফর ও কুলাঙ্গার জাতির পিতাকে হত্যা করেছিল। এই বন্দরে আমার শৈশব কেটেছে। সকালে স্কুল কলেজের কাজকর্ম শেষ করে আমি প্রায় ৮ ঘন্টা এই বন্দরে অবস্থান করতাম, এখানে আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ছিল। বন্দরের মানুষকে আমি অনেক ভালোবাসি ও স্নেহ করি। বঙ্গবন্ধুর কাজ থেকে আম রাজনীতি শিখেছি। ৭৩ সালে যখন আমি ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তখন দূর্ভিক্ষের সময় আমি তার সাথে দেখা করেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘সত্যিকারের লেখাপড়া ও জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়েই মানুষের ভালো করা শিখ। মানুষের ভালো করার মধ্যেই রাজনীতি। মানুষের ভালো করতে পারলেই রাজনীতিতে স্থায়ী হতে পারবে। আমি জীবনের ৬৫ বছর বয়সে তার এই কথাই ধারণ করার চেষ্টা করি। আমি চাই আমি ভালো মানুষ হয়ে আমার কাজের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সেবা করতে চাই। আল্লাহকে খুশি করতে হলে আগে মানুষকে ভালোবাসতে হবে। তাহলে এই জীবনের পরের যেই আরেক জীবন আসে সেই জীবনেও সুখী হওয়া যাবে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর প্রেসক্লাবের দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বন্দর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোবারক হোসেন কমল খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান
মুকুল, নাসিক কাউন্সিলর হান্নান সরকার, কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ দুলাল, ডিআইও-২ ইন্সপেক্টর সাজ্জাদুর রহমান, বন্দর ফাড়িঁ ইনচাজ ইন্সপেক্টর আহসান উল্লাহ, শিক্ষানুরাগি গিয়াসউদ্দিন, প্রেস নারায়ণগঞ্জ প্রকাশক মোঃ ফখরুল ইসলাম, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খান মাসুদ।
বন্দর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহম্মেদের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, সহ-সভাপতি কবির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক নাসির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ইমরান মৃধা সহ সকল সদস্যরা।
তিনি বলেন, আজকে রাজনীতিবিদ হওয়া মানেই অর্থ বিত্ত গাড়ি বাড়ির মালিক হওয়া। কিন্তু এই বাড়ি গাড়ির মালিক যারা সৃষ্টি করে থাকে তাদেরকে সবকিছু রেখেই শূন্য হাতেই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। আমি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলাম না। আমি মেয়র নির্বাচন করবো বলে নারায়ণগঞ্জবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা ভালো জানেন কাকে কি দেবেন। তিনি মনে করেছেন সারা নারায়াগঞ্জের দায়িত্ব আমাকে দেবেন আর সেইজন্যই কিন্তু আমাকে আমি অসুস্থ অবস্থায় যখন ল্যাব এইডে ভর্তি ছিলাম তখন তিনি বললেন আনোয়ার তোমাকে আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন দিলাম। তখন আমি হাসপাতালে বসে কান্নায় তাকে বললাম আমি তো অসুস্থ। তখন তিনি বললেন তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে এবং জেলা পরিষদ নির্বাচন করবে।
তিনি আরো বলেন, আমি তার সিদ্ধান্তে সুস্থ হয়ে মনোনয়ন দিয়ে আজকে মানুষের খেদমতের জন্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এই বন্দরে আমি কিছু করতে চাই। এই বন্দরের মানুষ আমার কাছে কিছু আশা করে আমি চাই।
আজকে এই প্রেসক্লাবের দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে ভবন নির্মানের যে দাবি উঠেছে তার ব্যাপারে এখন প্রতিশ্রুতি দেয়াটা এই নির্বাচনের সময়ে নির্বাচনের আচরণবিধিকে ভঙ্গ করে। আসলে আতাউর রহমান মুকুল আমার স্নেহধন্য ভাই। তিনি আজ এখানে ১ লক্ষ্ টাকা দেবেন বলেছেন আমি আনন্দিত তবে আরো কিছু দেবেন আশা করি। তিনি দুই টার্ম এখানে নির্বাচিত বলেন আনোয়ার।
তিনি আরো বলেন, বিন্দু বিন্দু করে অনেক বড় হওয়া যায়। তিনি আজকে ১ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছেন আগামীতে আরো অনেক কিছু হবে। তবে আমি আজকে এখানে কিছু ঘোষণা করবোনা আমি প্রেসক্লাবের সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই। এই জমিটি কার, এটি জেলা পরিষদ দিলো, সিটি করপোরেশোন ভাংলো। রাস্তার পাশে এই জমিটি এটি ভাঙতে জেলা পরিষদের অনুমতি নিলো কিনা বা প্রেসক্লাবের অনুমতি নিলো কিনা তবে আমি আশ্বস্ত করতে চাই আমি কিছু করতে চাই আপনাদের জন্য আমি কিছু করবো। তবে এখানে কিছু বলে আমি আচরণবিধি ভঙ্গ করতে চাইনা। আপনারা আমাকে এই জমির বিস্তারিত জানান তারপর আমার যা করার আমি করবো।
অনেক সাংবাদিক নিজেদের লেখা দিয়ে আমাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি করতে চাই তাদের লেখা দিয়ে। সবাই না তবে কেউ কেউ। আমরা চাই এই কাজটি থেকে আপনারা বিরত থাকুন। আমরা যারা রাজনীতি করি আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি রাজনীতির ফিল্ড তৈরী করতে চাই। আমাদের মধ্যে হানাহানি বিভেদ অনৈক্য এই অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই। আর এ কাজটি করতে পারে সাংবাদিকরা। তারা সঠিক তথ্য দিয়ে এই কাজটি করতে পারে কারন তারা নিরপেক্ষ। আমাদের মধ্যে এই হানাহানি আগে ছিলনা বলেন আনোয়ার।
তিনি বলেন, আজকে আমার মেয়ের অনুষ্ঠানে কোন বিএনপির লোককে দাওয়াত দিতে পারিনা কারণ তাহলে বলবে আনোয়ার সাহেব বিএনপির লোক হয়ে গেছে অথবা মুকুল আনোয়ারের লোক হয়ে গেছে। এ ধরনের লেখা আগে ছিলনা। সাংবাদিকরা কারো পক্ষ হতে পারেনা। মুকুল আমার পাশে থাকতে পারেনা এই সমালোচনার জন্য। এরকম অনেকেই। আসুক আমরা সবাই মিলে হানাহানি মারামারি বাদ দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নারায়াণগঞ্জটাকে গড়ে তুলি। বন্দরে কোনকিছু করতে কোন অসুবিধা নেই। জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও এমপি মিলে একসাথে এই বন্দরে সাজানো সম্ভব যার যার অবস্থান থেকে। রাজনীতি যার যার উন্নয়ন সবার এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আসুন আমরা হাতে হাত রেখে কাজ করি।