নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাওঘাট মধ্যমণি ঋষিপাড়া এলাকায় অবস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের দেবতোর সম্পতি দখলের অভিযোগ ওঠেছে শের আলী গংদের বিরুদ্ধে। এই দখলে কাজে সহযোগীতার অভিযোগ ওঠেছে প্রদীপ সরকার নামে আরেকজনের বিরুদ্ধে। দেবত্তোর সম্পত্তি রক্ষায় তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন মন্দিরের সভাপতি বিধূ ভূষণ দাস।
রোববার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখনকে সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় এই লিখিত আবেদন করেছেন।
লিখিত আবেদনে রূপগঞ্জের সাওঘাট মধ্যমণি পাড়া শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দিরের সভাপতি বিধু ভূষণ দাস উল্ল্যেখ করেন, আমরা রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাওঘাট মনি ঋৃষিপাড়া গ্রামের হিন্দু জনগোষ্ঠী। আমরা যুগ যুগ ধরে আমাদের ব্যবহৃত দূর্গা মন্দিরের জমি যা দেবত্তোর সম্পদ হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন পুজার্চনা করে আসছে। উল্লেখিত স্থানটি আমাদের এলাকার সমস্ত সনাতন জনগোষ্ঠী পূজার স্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছি।
কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ২৬ ডিসেম্বর বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩টায় শের আলী গং সহ তার সঙ্গীয় লোকজজন মন্দির দেবত্তোর সম্পত্তিটি দখলের উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে উল্লেখিত স্থানে হামলা করে এবং আমাদের গ্রামে ঢুকে সাধারণ জনসাধারণকে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
এমতাবস্থায় আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি এবং আমাদের আত্মচিৎকারে আশেপাশের এলাকার লোকজন আসলে শের আলী গং আমাদের লোকজনকে আহত করে মন্দিরের সাইনবোর্ড সহ অন্যান্য স্থাপনা ভাংচুর করে।
যাওয়ার সময় শের আলী গং বলায় এই স্থানে আর কোনদিন পুজার্চনা করা যাবে না এবং এই দেবত্তোর সম্পত্তি তার নিজের মালিকাধীন দাবি করে। তাদের এই দাবির কারনে আমরা পুনরায় শের আলী গংদের হামলা মামলার শিকার হতে পারি বলে আমরা আতংকিত।
গত ২৬ ডিসেম্বর শের আলী গংয়ের হামলার ঘটনায় আমরা রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করি। কিন্তু তারপরেও শের আলী গংয়ের প্রধান সহযোগী একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী প্রদীপ সরকার যিনি শের আলী গংয়ের ব্রিকফিন্ডের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।
এই প্রদীপ সরকার শের আলী গংয়ের অবৈধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত এবং শের আলী গং প্রদীপ সরকারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যাতে বিষয়টি সাম্প্রদায়িক রূপ লাভ না করে এমনকি আমাদের উক্ত মামলার কারনে অচেনা অপরিচিত লোকজন আমাদের নিরীহ জনসাধারণকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এমতাবস্থায় আমরা হিন্দু জনগোষ্ঠী চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই শের আলী গং ও প্রদীপ সরকারকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন, ফতুল্লা থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিবু দাস, বন্দর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বন্দর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সুজন দাস, গোপীনাথ দাস স্মৃতি সংঘ আহ্বায়ক সঞ্জয় দাস, সদস্য সচিব কৃষ্ণ আচার্য্য রাজীব দাস, রূপগঞ্জ পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি বিধু চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দাস প্রমূখ।