নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর দীর্ঘ দেড়মাস যাবৎ বন্ধ । ইসলামপুর এলাকাটি মূলত থান কাপড়ের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে শাড়ি, থ্রি-পিস, কাপড়ের পাইকারী বিক্রি চলে সারা বছর। তবে খুচরাও বিক্রি হয় কোনো কোনো দোকানে। সারাদেশের বেশিরভাগ দেশীয় বস্ত্র কারখানার উৎপাদিত কাপড়ের শোরুম রয়েছে এখানে। পাশাপাশি থাইল্যান্ড, চীন, পাকিস্তান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কাপড়ের সমাহার রয়েছে এ মার্কেটে। দেশি থান কাপড়ের ৬০ শতাংশ ও বিদেশি থান কাপড়ের ৪০ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় ইসলামপুরের এ কাপড়ের বাজারের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার ( ২৮ এপ্রিল ) করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দুই মাস যাবৎ বন্ধ থাকায় ইসলামপুর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে । ব্যবসায়ীদের দৈনিক অন্তত ৬ ঘন্টা করে দোকান খোলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এবং ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতি এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এবং সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দোকান মালিক সমিতির যুগ্ন প্রচার সম্পাদক ও এফবিসিসিআইর সাধারণ সদস্য এবং ইসলামপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাহী সদস্য ও সোনারগাঁও ভূঁইয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বাবুল ।
লায়ন বাবুল বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুর দীর্ঘ দেড়মাস যাবৎ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে রমজান মাস । রমজান মাসকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি প্রস্তুত করা হয় তৈরি পোষাক । এই বন্ধের সাথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার দোকান। সেই সাথে আটকে পড়েছে দোকানদারের প্রস্তুতকৃত প্রায় এক’শ কোটি টাকার থান কাপড়, থ্রি পিছ, লুঙ্গি, শাড়ি , শার্ট, পাঞ্জাবির কাপড় । তার সাথে থমকে গেছে প্রায় ১ লক্ষ কর্মচারী ও শ্রমিকের কর্মসংস্থান।
তিনি বলেন, রোজার ঈদকে সামনে রেখে ইসলামপুরের থানা কাপড় ব্যবসায়ীরা প্রায় এক’শ হাজার কোটি টাকা ইনবেস্ট করেছে । করোনার কারণে এ সমস্ত কাপড়ের দোকান গুলো জবলট হয়ে যাবে । বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দোকান প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। তাই সরকার যদি প্রনোদনা না দেয় ইসলামপুর ব্যবসায়িরা এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে না। বৃহত্তর এই ইসলামপুর ব্যবসায়ীদের ব্যাংক লোন, মহাজনের বাকী, দোকান ভাড়া , কর্মচারী বেতন নিয়ে ইতিমধ্যে তারা মহাবিপদে মধ্যে পরে গেছে । এই সংকটময় সময়ে কাটিয়ে উঠতে ইসলামপুর বস্তু ব্যবসায়ীদের কয়েক বছর লেগে যাবে । কারন ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার চালান ঘাটিয়ে নিঃসহ হয়ে ঘরে বসে আছে ।
তিনি আরোও বলেন, ইতিমধ্যে দেশের অন্যতম দুইটি পাইকারি কাপড়ের হাট শেখেরচর ও বাবুরহাট সরকারি স্বাস্থ্য বিধির নিয়ম নীতি মেনে শর্তসাপেক্ষে খুলে দেওয়া হয়েছে । সেই সাথে বৃহত্তর পাইকারি কাপড়ের মার্কেট ইসলামপুরকেও শর্তশাপেক্ষে খোলার অনুমতি না দেওয়া হয় তাহলে এখানকার ব্যবসায়ীরা পথে বসতে হবে । কারন কোটি কোটি টাকার মালামাল অবিক্রিকৃত রয়ে যাবে । ইসলামপুর বস্তু ব্যবসয়ীদের পক্ষে থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন করছি যাতে করে শর্তশাপেক্ষে আমাদেরকে দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হোক । এতে করে কিছুটা হলেও ইসলামপুরের কাপড়ের ব্যবসায়ীরা মারত্মক লোকসানের হাত থেকে বেচে যাবে।