জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় সবধরনের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানকে দুই বছর নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তবে তিনি দায় স্বীকার করে নেয়ায় এক বছর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে।
সাকিব আল হাসান নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না তার সমর্থকরা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে।
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সামনেও বিক্ষোভ-মিছিলও হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা প্রচারণা।
তবে সমর্থকদের শান্ত থাকতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনুরোধ জানিয়েছেন সাকিব।
ফেসবুকে নিজের অফিশিয়াল পেজে দেয়া বার্তায় সাকিব বলেন, ‘ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলছি, আমার এবং আমার পরিবারের খুব কঠিন সময়ে আপনাদের নিঃশর্ত সমর্থন ও স্নেহ আমাকে ছুঁয়ে গেছে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার মাহাত্ম্য গত কয়েক দিনে আমি অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি।’
শাস্তি পাওয়ার কয়েক দিন আগে সাকিবের নেতৃত্বে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। বিসিবি দাবি মেনে নেয়ার পর তুলে নেয়া হয় ধর্মঘট। এরপরই নিষিদ্ধ হন সাকিব। এ কারণে তার অনেক সমর্থকই এ শাস্তির পেছনে বিসিবির হাত রয়েছে বলে মনে করছেন।
এ ভুল ভাঙালেন সাকিব নিজেই, ‘আমি শাস্তি পাওয়ায় যেসব ভক্ত ব্যথিত হয়েছেন তাদের শান্ত ও ধৈর্যশীল থাকার অনুরোধ করছি। এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই, আইসিসি দুর্নীতি দমন ইউনিটের তদন্ত প্রক্রিয়া ছিল গোপনীয়। শাস্তি পাওয়ার কিছুদিন আগে আমি বলার পরই তারা জানতে পেরেছে। এরপর থেকে বিসিবি আমার প্রতি সর্বোচ্চ সাহায্যশীল ছিল এবং আমি সে জন্য কৃতজ্ঞ।’
সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেকেই নানা উপায়ে তাকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু শাস্তিটা তিনি মেনে নিয়েছেন, আর এটাই তার কাছে সঠিক বলে মনে হয়েছে।
এ নিয়ে সাকিবের ভাষ্য, ‘লোকে কেন আমাকে সাহায্য করতে চায় তা বুঝতে পারছি। এটার প্রশংসাও করছি। যদিও এটা একটি প্রক্রিয়া এবং আমি শাস্তি মেনে নিয়েছি। আমার কাছে এটাই সঠিক বলে মনে হয়েছে।’
প্রসঙ্গত দুই বছর আগে জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব পান। তবে তা গোপন রাখেন আইসিসির অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিটের (আকসু) কাছে। এর দায়ে বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে সব ধরনের ক্রিকেটে এক বছর নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি।
যদিও প্রথমে নিষেধাজ্ঞাটা ছিল দুই বছর। তবে ভুল স্বীকার করায় এক বছর শিথিল করা হয়। এ সময়ে ফের অপরাধ করলে আগের শাস্তিই বহাল থাকবে। আর কোনো দুর্নীতিতে না জড়ালে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন সাকিব।
সাকিবের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ২৯ অক্টোবর থেকে। সেই হিসেবে আগামী বছরের একই দিনে তার এক বছরের শাস্তির মেয়াদ শেষ হবে।
আইসিসির বিভিন্ন শর্ত পূরণ তখন থেকেই মাঠে ফিরতে পারবেন এই অলরাউন্ডার। আর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর শুরু হবে ১৭ অক্টোবর। চলবে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত।
এর মাঝে প্রথম রাউন্ডের খেলা চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। ২৪ই অক্টোবর থেকে শুরু হবে সুপার-১২ পর্ব বা মূল আসর। বিসিবি ইতিমধ্যে জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়ায় সাকিবের শাস্তি কমানোর চেষ্টা করবে।