নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কিছুক্ষণ আগে শুনলাম যারা এখানে আসছিল তাদের ওপর হামলা হয়েছে। এতই যদি উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে ভয় পান কেন। একটা দল সম্মেলন করবে সেটাকে ভাঙেন কেন। শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করছি। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে দেখেন। এ দেশের মানুষ আপনাদের বিতাড়িত করে ছাড়বে।
মহাসচিব বলেন, আগের রাতে ভোট হয়েছে, নিজেদের পছন্দমত লোককে পার্লামেন্টে বসানো হয়েছে। বিচার আইন আদালত সম্পুর্ণভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমাদের শত শত নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। আজকে আমাদের গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্তানরা তাকিয়ে থাকে, কখন তাদের বাবা ফিরে আসবে। তারা কথায় কথায় মায়ের বুক খালি করে দেয়, সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে গুম করে দেয়।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের পাচঁরুখী এলাকাতে বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের বাসভবনে আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব গুলো কথা বলেন।
মহাসচিব বলেন, প্রতিবছর তারা তিন চারবার করে দাম বাড়ায়। আর বিদ্যুতের দাম তো বাড়তেই আছে। একদিকে তারা দুর্নীতি করে আরেকদিকে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায়।
তিনি বলেন, এদেশে একটা ভোট হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন কিভাবে ভোট হয়েছে। সেখানে তারা তাদের পছন্দের লোকদের বসিয়ে দিয়েছে। আজ আইন আদালত ধ্বংস হয়ে গেছে৷ এ আদালতের মাধ্যমেই আজ বেগম জিয়াকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তারেক রহমানের নামে কোন প্রমান নেই, ২১শে আগষ্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় পরে তার নাম যুক্ত করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতে তিনি আবেদন করেছিলেন আমার কেস খারিজ করে দিন। সে মামলাটাকে তারা খারিজ করেননি। জোবায়েদা রহমানকেও তারা দেশে আসতে দিতে চান না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ৬০০ এর অধিক নেতাকে গুম করে দিয়েছে। আজ ইলিয়াস আলীর মেয়ে ছেলে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে কবে তাদের বাবা ফিরে আসবে। হাজার হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে বিনা বিচারে। এভাবে এদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিকদের গলা চেপে ধরা হয়েছে। আপনারাা লিখতে পারবেন না। যদি লিখেন জেলে নেয়া হবে চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হবে। সংবাদকর্মীরা কিভাবে চলবে সেটা নিয়ে এখন তারা আইন তৈরি করছে। এটা তাদের পুরানো অভ্যাস। ৭৫ সালে একইভাবে আওয়ামী লীগ তাদের এ হত্যা গুম বন্ধ যখন কোন ভাবেই আড়াল করতে পারছিল না তখন তারা বাকশাল করেছিল।
তিনি আরো বলেন, যারা কথায় কথায় গুলি করে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই লড়তে হবে। আমাদের নেতা আজ আট হাজার মাইল দূরে আমার নেত্রী গৃহবন্দী। আমাদের লড়াই করে এর থেকে বের হতে হবে। এদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক উপায়ে টোটাল ওয়ার করতে হবে। যারা তারেক রহমানকে বিশ্বাস করেন তাদের একটাই কাজ, ঐক্যবদ্ধ থাকা। আজকে শুধু তারেক রহমান কিংবা খালেদা জিয়ার লড়াই নয়। আমাদের দেশ স্বাধীন রাখতে পারব কিনা, একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারব কিনা সেই লড়াই। আমাদের এ সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই।
আমরা সরকারকে পরিষ্কার ভাবে বলেছি পদত্যাগ করুন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। একটা নতুন জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। সে সরকার সকলকে নিয়ে কাজ করবে। আসুন আমরা সকলে একসাথে এগিয়ে যাই।
আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ইউসুফ আলী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জুয়েল আহম্মেদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, প্রধান বক্তা বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিশেষ অতিথি বিএনপি সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ( ঢাকা বিভাগ) এড. আব্দুস সালাম আজাদ, বেনজীর আহমেদ টিটু, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান আব্দু।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন, আব্দুল হাই রাজু, জাহিদ হাসান রোজেল, আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মাশুকুল ইসলাম রাজিব, রুহুল আমিন শিকদার, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্তু, সদস্য সচিব মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলম ভুঁইয়া, আড়াইহাজার উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান সেলিম, সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভুঁইয়া, আড়াইহাজার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান বাচ্চু, সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন সাকিব, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোবারক হোসাইন, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম শাহিন, আড়াইহাজার পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইয়াসিন আরাফাত, গোপালদী পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল বাশার সুমন, সরকারি সফর আলী কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।