নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
আগামী ৩০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী এমপি সেলিম ওসমানকে লাঙ্গল প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে তবেই নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে নেতৃবৃন্দরা।
মঙ্গলবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বন্দরে সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের সোনাকান্দা বড় মসজিদ এলাকায় মহানগর আওয়ামীলীগ(১৯-২৭ ওয়ার্ড) এর উদ্যোগে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্বের বক্তব্যে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এ ঘোষণা দেন। যাকে এমপি সেলিম ওসমান সব সময় নিজের রাজনৈতিক গুরু সম্বোধন করেন।
ওই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহামুদা মালা, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবেদ খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিব আল মুজাহিদ পলু সহ মহানগর আওয়ামীলীগের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। মত বিনিময় সভাটি সঞ্চালনা করেছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা।
আনোয়ার হোসেন বলেছেন, আমি আওয়ামীলীগ করে বলেই সেলিম ওসমানের লাঙ্গল মার্কায় নির্বাচন করতে নেমেছি। কারন সেলিম ওসমান আমাদের সবার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত মহাজোটের প্রার্থী। আর আমরা শেখ হাসিনার অনুগত এবং নেতৃত্বে বিশ্বাসী। আর সেলিম ওসমান আগামীতে আবারো এমপি হলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের কর্মীরা মূল্যায়িত হবে বলে আমি আশা করি। তাই আগামী নির্বাচনে সেলিম ওসমানকে লাঙ্গল মার্কায় বিপুল ভোটে বিজয়ী করে তবেই আমরা ঘরে ফিরবো।
মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। আওয়ামীলীগ থেকে যারা মনোনয়ন নিয়ে ছিলেন তারা কেউ মনোনয়ন জমা দেন নাই। পত্রিকায় নিউজ হচ্ছিলো। আমি বলে ছিলাম বাদল, খোকন সাহা কেউ আমাকে ছেড়ে যাবেন না। আজকে আনোয়ার ভাইয়ের মাধ্যমে সেই মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আনোয়ার ভাই আমার গুরু উনি আমাকে আসামীর কাঠ গড়ায় দাড় করিয়ে দিলেন। আমার সাথে সব সময় আওয়ামীলীগের সাথে সুসম্পর্ক ছিল। আমি আওয়ামীলীগের আনোয়ার ভাই, রশিদ ভাই উনাদের নিয়েই সব সময় কাজ করেছি। আর খোকন সাহা আর বাদলই গত নির্বাচনটা করে ছিলেন এবং ওরাই আমাকে এখানে দাড় করিয়ে ছিলেন দিপুও সেখানে উপস্থিত ছিলো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মাঝে হয়তো কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়ে ছিল। না হলে বাদল, খোকন সাহা, দিপু, বাবলী, শিরীন আপাকে সোনারগাঁওয়ে গিয়ে মনোনয়ন চাইতে হবে। এটা আমরা একত্রে সবেই সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। আমার গুরু আনোয়ার ভাই ও খোকন সাহার উপস্থিতিতেই একটি সভা মঞ্চে নারায়ণগঞ্জে সর্ব প্রথম আমি নিজেই ৫টি আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দাবী করে ছিলাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে আমি আপা বলে সম্বোধন করি উনি আমাকে নির্দেশ দিলেন আমি যেখানে আছি সেখানেই যেন থাকি। যখন একে একে নারায়ণগঞ্জ পাট মিল গুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়ে ছিল তখনও আপার আমার উপর আস্থা রেখে আমাকে বিকেএমইএ প্রতিষ্ঠার পরামর্শ দেন। উনার আস্থার আমি রক্ষা করতে পেরেছি আজকে বিকেএমইএ এর মাধ্যমে নীটপন্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে। এই নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রতি মাসে বিকেএমইএ এর মাধ্যমে কম করে হলেও ১২’শ কোটি টাকা প্রদান করা হয় ২৫ লাখ শ্রমিকের স্থানে যদি ১৫ লাখ শ্রমিককে ন্যূনতম ৮ হাজার টাকা করে বেতন হিসেব করি। এই টাকা নারায়ণগঞ্জের বাইরে চলে যাচ্ছে। শুধু মাত্র আমাদের নারায়ণগঞ্জের মানুষের সম্বনয় হীনতা আর অনীহার কারনে।
উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার উপর একাধিকবার আস্থা রেখেছেন। আমার প্রশ্ন তবে কেন আমার মনোনয়নটা কেন আমার গুরু আনোয়ার ভাই এবং রশিদ ভাইয়ের মনোনয়ন হলো না উনারা তো আমার বাবার সাথে রাজনীতি করেছেন। আর যারা আমার ছোট ভাইয়ের সাথে রাজনীতি করেছেন তারা কেন শুধুই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের মনোনয়ন কিনলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের কেন কিনলেন না? ইতোমধ্যে আমি ঘোষণা দিয়েছি বন্দরে সর্বাধুনিক আওয়ামীলীগ কার্যালয় নির্মাণ করে দিবো এবং সেখানে বসেই আমি আমার পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবো। নারায়ণগঞ্জ এবং বন্দরে কোন দল নয় সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে এলাকার উন্নয়ন করে যাবো।
সবশেষ আমি বলবো অতীতে ভুলত্রুটি যা হওয়ার হয়েছে। তবে আমার ভুল ত্রুটি যা হয়েছে তার সবটাই আমার রাজনৈতিক গুরু আনোয়ার ভাই এবং রশিদ ভাইয়ের। তবে আমি বলবো ভবিষ্যতে সেই ভুল আর করতে চাই না। আগামীতে যেন নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনেই নৌকা মার্কা হয় আমরা সবাই মিলে সেভাবেই কাজ করে যাবো।
মত বিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি চন্দন শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা পিপি অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া,মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগে সভানেত্রী ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ সাগর, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ সহ মহানগর আওয়ামীলীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা।