ডেস্ক রিপোর্ট :
আজ জেল হত্যা দিবস। পঁচাত্তরের তেসরা নভেম্বর কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে। শহীদ মনসুর আলীর সন্তান আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম বলছেন, এ হত্যায় জড়িত থাকায় বিএনপির শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ওবায়দুর রহমান, তাহের উদ্দিন ঠাকুরের বিচার হওয়া উচিত। পাশাপাশি তৎকালীন সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ, বিমানবাহিনী প্রধান একে খন্দকারসহ সেনা কর্মকর্তাদের কার কি ভূমিকা ছিল তা বের করতে স্বাধীন কমিশন গঠনের আহ্বানও তার।
পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার। ১৯৭৫ সালের তেসরা নভেম্বর মধ্যরাতে এখানে এসে থামে সামরিক বাহিনীর একটি গাড়ি। সশস্ত্র কয়েকজন ঢুকে যায় কারাগারে। রাত তিনটার দিকে গুলির শব্দে কেঁপে উঠে ঢাকা।
হত্যা করা হয় জাতীয় চারনেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে।
শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সন্তান মোহাম্মদ নাসিম জানান, মোশতাকের অভিলাস ছিল হয়তো চারনেতা তার কাছে সারেন্ডার করবে। কিন্ত তারা তা করেননি। তাই আওয়ামী লীগ ও জাতিকে নেতৃত্বশুণ্য করতে চারনেতাকে হত্যা করা হয়। কিলার মোশতাকের সাথে ছিল জিয়াউর রহমান।
দীর্ঘ সময় পর ২০০৪ সালে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রায় হলেও সুবিচার হয়নি বলেও মত তার। বলছেন, এর নেপথ্যে থাকা কুশিলবেরা এখনও আছে নাগালের বাইরে।
শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর সন্তান মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, তাহের উদ্দিন ঠাকুর আরো কিছু ব্যক্তি ছিল যারা চক্রান্তের সাথে জড়িত ছিল। কিন্ত তাদের চরম শাস্তি দেয়া সম্ভব হয়নি। কারণ তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি সরকার। ১৫ আগস্টের পর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত গোয়েন্দা সংস্থা, সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কমান্ড, সিভিল প্রশাসনে কারা ছিল, কি ভূমিকা ছিল তদন্ত কমিশন করে এসব বের করা উচিত।
তেসরা নভেম্বর কারাগারে গণহত্যা হয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে এ ঘটনার তদন্ত হলে ক্ষমতার উচ্চাকাঙ্খীদের কঠোর বার্তা দেয়া যেত বলেও মত তাদের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫ আগস্টের মধ্যে একটা জেনোসাইডের এলিমেন্ট আছে। আর ৩ নভেম্বর পুরোপুরি গণহত্যা। সুষ্ঠু তদন্ত কখনোই হয়নি। রাজনৈতিক বিবেচনায় তদন্ত প্রভাবিত হয়েছে। পূর্বাপর সব বিশ্লেষণ করে উপসংহার টানা যেত। মনে হয় না, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ আছে।
তারাও মনে করছেন, জাতীয় চার নেতা হত্যায় নেপথ্যে থাকা সেনা অফিসার ও রাজনীতিবিদদের বিচারে স্বাধীন কমিশন গঠন করা যেতে পারে, তাতেই সামনে আসবে নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে কার কি ভূমিকা।