ডেস্ক রিপোর্ট: আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। মুক্তিযুদ্ধর শেষ দিনগুলোতে নিশ্চিত পরাজয় জেনেই পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর আল-বদর, আল-শামসরা হত্যা করে এদেশের সেরা সন্তান- শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসকসহ মেধাবী মানুষদের। বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে বাংলাদেশকে পঙ্গু করে রাখাই ছিলো পাকিস্তানিদের কৌশল। তবে বাস্তবতা হলো ৪৯ বছরে বাঙালি বহুক্ষেত্রেই পেছনে ফেলেছে পাকিস্তানকে।
১৯৭১- এ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় একটি স্বাধীন ভূখন্ড, নিজস্ব মানচিত্র আর একটি লাল সবুজের পতাকা। কিন্তু এর আর আগে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসরদের নৃশংস ও ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনায় প্রাণ দিতে হয় বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের।
পাকিস্তানি বাহিনীর জেনারেল রাও ফরমান আলীর তালিকা ধরে একাত্তরের ১০ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত আল-বদর, রাজাকাররা এদেশের সেরা মেধাবী সন্তানদের হত্যায় নেমে পড়ে। সবচেয়ে বেশী সংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে ১৪ই ডিসেম্বর।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সঙ্গীতজ্ঞ, রাজনীতিক ও বিভিন্ন পেশার অগ্রসর চিন্তার মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করা হয়। জাতিকে মেধাহীন রাখার যে পরিকল্পনা নিয়ে পাকিস্তানিরা এ ক্ষতি করেছে তা আজও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি বলে মনে করেন গবেষকরা।
বেসরকারিভাবে বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশন নামে একটি উদ্যোগ শুরু হলেও বাহাত্তরের ৩০ জানুয়ারি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হ’ন ঐ কমিশনের আহবায়ক চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদ একটি কমিশনের উদ্যোগ নিলেও পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত কয়েকজনের বিচার হয়েছে বটে, তবে স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও শুধুমাত্র বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের কোন তদন্ত বা বিচার হয়নি।