নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
সিদ্ধিরগঞ্জে একটি ফ্ল্যাটে মা ও দুই কন্যা শিশুকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় ঘাতক আব্বাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কয়েকদিন আগে তার শালা হাসান তাকে চড় মেরে আব্বাসের স্ত্রী, সন্তানসহ তার শ্যালিকা নাজমিনের ফ্ল্যাটে চলে আসে।
আর তার জের ধরেই বৃহস্পতিবার সকালে আব্বাস এই তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায়। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলা পুলিশ লাইনসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, আব্বাস প্রাথমিকভাবে হত্যাকান্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছেন। সে ইয়াবায় আসক্ত।
খুন করার কয়েক ঘন্টা পর আব্বাসকে সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার স্টেশনের একটি কমিউনিটি সেন্টারের টিবেলের নিচে পালিয়ে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে। ঘাতক আব্বাস পটুয়াখালী জেলার পইক্কা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। সে সিদ্ধিরগঞ্জ বাতেনপাড়া এলাকায় ভাড়া থাকতো। পেশায় সে বাবুর্চী।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের সিআইখোলা এলাকার আনোয়ারের বাড়ির ৬তলা ভবনের ৬ তলার সুমন মিয়ার ফ্ল্যাট থেকে গলাকাটা অবস্থায় স্ত্রী নাজমিন (২৮), দুই মেয়ে নুসরাত (৮) ও খাদিজার (২) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ঘাতক আব্বাসের মেয়ে এবং নিহত নাজমিনের ভাগ্নি সুমাইয়কে (১২) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে এই হত্যাকান্ডের হোতা হিসেবে নিহত নাজনিনের দুলাভাই আব্বাসকে সন্দেহ করে আসছিল স্বজন ও পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই নিহত নাজমিনের ভগ্নিপতি ও আহত সুমাইয়ার বাবা আব্বাস পলাতক ছিলো।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নাজমিনের স্বামী সুমন সানাড়পাড় এলাকায় জোনাকি পাম্প স্টেশনের চাকরী করে। ডিউটি শেষে সকালে সুমন বাসায় ফিরে দেখে স্ত্রী ও দুই কন্যার লাশ পড়ে আছে। পরে তার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেয়।
নিহতের ছোট ভাই হাসান জানান, আমার বড় বোনের স্বামী আব্বাস প্রায়ই মাদক সেবন করে এসে সকলকে মারধর করতো। বুধবার রাতে আমার ভাগ্নি আব্বাসের মেয়ে পালিয়ে আমার ছোটবোন নাজমিনের বাড়িতে আসে। তাকে নিতে এসেই সে আমার বোন নাজমিন ও তার দুই মেয়েকে গলাকেটে হত্যা করেছে। এছাড়া তার নিজের মেয়েকেও আহত করে।
এঘটনার খবর পেয়ে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে নিহত নাজমিনের বোনের স্বামী আব্বাস এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। আব্বাসের সাথে তার স্ত্রী ইয়াসমিনের বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরে আব্বাসের শ্যালিকার বাসায় তার স্ত্রী চলে আসে। সে একটি গার্মেন্টে চাকরি করে।
বৃহস্পতিবার সকালে সে কারখানায় চলে যায়। শ্যালিকার সঙ্গে আলাপকালে কোন বিরোধের জের ধরেই শ্যালিকা ও তার দুই মেয়েকে ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। আর আব্বাস তার প্রতিবন্ধী মেয়েকেও জখম করেছে। আমরা আব্বাসকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে। এর কয়েক ঘন্টা পর আব্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়।