নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির আধুনিক ভবন নির্মাণের নবনির্বাচিত কমিটির হাতে আরো ৫০ লাখ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। এ সময় তিনি আগামী ৩ বছরের মধ্যে আধুনিক আইনজীবী সমিতি ভবন এবং জেলার একমাত্র ‘ল’ কলেজটি অত্যাধুনিক কলেজে রূপান্তরিতক করা সম্ভব হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
রোববার ( ৩ ফেব্রুয়ারি ) রাত ৮টায় রাইফেল ক্লাবের তৃতীয় তলা কমিউনিটি সেন্টারে নারায়ণগঞ্জ-৫ সংসদীয় আসনে ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়ার হাতে ৫০ লাখ টাকার চেকটি তুলে দেওয়া হয়।
এমপি সেলিম ওসমানের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দুই দফায় মোট ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেছেন তিনি। এর আগে ২০ জানুয়ারী অসুস্থ্য অবস্থায় থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তাঁর পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল আইনজীবী নেতৃবৃন্দদের কাছে ১ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করে ছিলেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়ার সভাপতিত্বে উক্ত মত বিনিময় সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখে জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন।
মত বিনিময় সভায় সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জের ভবিষ্যত উন্নয়নের লক্ষ্যে আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে বসেছি। আজকে আইনজীবীদের সাথে বসলাম। এরপর আমি নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিক ভাইদের সাথেও বসবো। প্রতিটি ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন এলাকায় উন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের সাথে খোলাখুলি আলোচনার মধ্য দিয়েই কাঙ্খিত উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।
আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জকে একটি আধুনিক নারায়ণগঞ্জ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু কারো একার পক্ষে তা করা সম্ভব নয়। এজন্য সকলের সহযোগীতা অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই এই উন্নয়ন কমিটি। এ কমিটির মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হলে সামাজিক ব্যাধি মাদক সহ সকল ধরনের সমস্যার সমাধানের পথও সুগম হবে বলে আমি মনে করি। যদি না কমিটির কেউ কোন প্রকার স্বজনপ্রীতি না দেখায়।
সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া এবং চলমান কিছু উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি সকলের সহযোগীতায় ৭টি ইউনিয়নে ৭টি স্কুল নির্মাণ করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর নামে স্কুল ভবন এবং অডিটরিয়াম করতে পেরেছি, শেখ রাসেলের নামে স্কুল ভবন হয়েছে, শেখ জামালের নামে স্কুল ভবন হয়েছে, নারায়ণগঞ্জ কলেজে আধুনিক ১০তলা ভবন প্রায় শেষ পর্যায় যেটি শেখ কামাল ভবন নামে নামকরণ করা হবে, মগ্যার্ণ স্কুলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলেতুনচ্ছো মুজিব নামে ভবন হচ্ছে, শহরে শিল্পকলা একাডেমী ভবনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়, জেলা পাবলিক লাইব্রেরী ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, খানপুরে ৩০০ শয্যা হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করনের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যেটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত হবে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবন, আধুনিক ‘ল’ কলেজ, বিকেএমইএ মাধ্যমে বিকেএমইএ কমপ্লেক্স টাওয়ার, টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি নির্মিত হবে। এসব উন্নয়ন গুলো সম্পন্ন করতে পারলে আপনাদের সন্তান যারা দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের ভবিষ্যত কত উজ্জল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিবে একটি বার ভেবে দেখবেন। উন্নয়ন কাজ করতে গেলে বাধা বিপত্তি আসবেই। সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করেই আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
এমপি সেলিম ওসমান বক্তব্যে জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির সকলকে অভিনন্দন এবং ভবিষ্যত সাফল্য কামনা করেন। পাশাপাশি নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সর্মথিত প্যানেলের নিরুস্কুল বিজয়ে অসামান্য অবদান রাখায় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। সেই সাথে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সর্বাত্মক সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কারনে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলকেও অভিনন্দন জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে এমপি সেলিম ওসমানের ভবিষ্যত পরিকল্পনা গুলো সফল করতে আইনজীবীদের জায়গা থেকে সকল প্রকার সহযোগীতার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বেগম বাবলী সহ আইনজীবী নেতৃবৃন্দরা।
এমপি বাবলী বলেছেন, যেকোন উন্নয়নে সকলের সহযোগীতা অত্যন্ত জরুরি। আমরা আইনজীবীরা আমাদের অবস্থান থেকে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান সহ সকল জনপ্রতিনিধিদের সর্বাত্মক সহযোগীতা করবো পাশাপাশি আমরা আইনজীবীরা যেকোন পরিস্থিতিতে সকলেই ঐক্যবদ্ধ থাকবো।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারাজ উদ্দিন, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূইয়া, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা, অ্যাডভোকেট মেরিনা আক্তার, জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী আহম্মদ, সহ সভাপতি বিদ্যুৎ সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, কোষাদক্ষ্য আব্দুর রউফ, অ্যাপায়ন বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ কাজল, ক্রীড়া সম্পাদক মাসুদ রানা, সাংষ্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদুল হক সুমন, লাইব্রেরী বিষয়ক সম্পাদক সুভাষ বিশ্বাস, সমাজ সেবা বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হক, কার্যকরী সদস্য হাসিবুল ইসলাম রনি, আব্দুল মান্নান, মশিউর রহমান, তানিয়া ইসলাম প্রমুখ।
আইনজীবী ছাড়াও মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, ১৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল আহম্মেদ সাগর, ২০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ, ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন, ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর শিউলি নওশেদ, শারমিন হাবিব বিন্নী, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম.এ সালাম সহ অন্যান্যরা।