নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নগরীর ১ নম্বর বাবুরাইল এলাকায় চার তলা ভবন ধ্বসে সোয়েব (১২) নামে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্র নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরো সাতজনকে আহত অবস্থায় ভবনের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া চারটায় বাবুরাইলের মুন্সিবাড়ি এলাকার বাবুরাইল খালের পাশে অবস্থিত এইচএম ম্যানশন নামে ভবনটি ধ্বসে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোয়েব বাবুরাইল এলাকার সানারাইজ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা মৃত শাহাবুদ্দিন। নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো.আব্দুল্লাহ্ আল আরেফীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভবন ধ্বসের ঘটনায় আহতরা হলেন, বাবুরাইল এলাকার বাসিন্দা সোনিয়া (২২), ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া ইউসুফ (২৬) এবং অনিক (১৯)। আহত এই তিনজনের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপতালের কর্তব্যরত ডা.সাবিনা ইয়াসমিন নিশ্চিত করেন। বাকি চারজনের পরিচয় জানা তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব হয়নি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো.আব্দুল্লাহ্ আল আরেফীন জানান, এখনও দুইজন ভবনের ভেতরে আটকে আছে বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে ওয়াজিদ (১২) নামে এক শিশু ভবনের ভেতর আটকে রয়েছে বলে আপাতত নিশ্চিত হওয়া গেছে জানা গেছে। উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের ৮ টিম কাজ করছে।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, নাসিকের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকসহ বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধ্বসে জাওয়া ভবনটি প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর আগে প্রথম তলার কাজ শুরু হয়। পরে ৩য় তলা পর্যন্ত কমপ্লিট হয়। তবে ভবনটির কোন ফাউন্ডেশন নেই বলে জানান এলাকাবাসী। দুর্ঘটনার সময় ভবনটিতে ৩০ জনের মতো লোক ছিলো মনে করছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, ধ্বসে পরা বিল্ডিংটি এমনিতেই খুবই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় ছিলো। তাদের দাবি, ভবনটি নির্মাণের সময় পিলারের নিচে তেমন কোন বেজমেন্ট দেয়া হয়নি। নড়বড়ে ভিত্তি নিয়ে তৃতীয় তলার উপর আবার ৪র্থ তলার কাজ চলমান ছিলো। একই সাথে পশ্চিম পাশের পিলারগুলো খালের উপর থাকায় ভবনটি ধ্বসে পড়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ধ্বসে যাওয়া ভবনটির পাশের ভবনের বাসিন্দা তাসলিমা জানান, বাবুরাইল এলাকার মৃত রফিকের স্ত্রী জয়বুন্নেছা এই ভবনের মালিক। এখানে বাড়িওয়ালার মেয়ে শিউলি আক্তারসহ তাদের ৩টি পরিবার থাকেন। তৃতীয় তলায় থাকেন জয়বুন্নেছার ছেলে আজহার উদ্দিনের স্ত্রী। তবে তারা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। একটি অনুষ্ঠানে দাওয়াতে গিয়েছিলেন বলে তারা রক্ষা পান।
এদিকে পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি যারা আটকে আছেন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়া হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এই ভবনসহ ঝুকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে এধরণের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। কাদের ব্যর্থতার জন্য ভবন ধ্বসের ঘটনাটি ঘটেছে তা তদন্ত করা হবে।