নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় নিখোঁজের ১০ দিন পর ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান চৌধুরী ওরফে সেলিম চৌধুরীর (৫২) মরদেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে কাশীপুরের ভোলাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মোহাম্মদ আলীর ঝুটের গোডাউন থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যাকান্ডের মূলহোতাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
তারা হলেন, হত্যাকান্ডের মূলহোতা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী (৫০), কর্মচারী ফয়সাল (২৮) ও ইউনুস (২৮) সহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ফয়সাল ফতুল্লা ডিকরীরচর এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন এ সকল তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ফয়সাল হত্যাকান্ডের ঘটনা স্বীকার করেছে। ফয়সাল জানান, ব্যবসায়ের সুবাদে সেলিম চৌধুরী প্রায়ই মোহাম্মদ আলী আর্থিকভাবে সহায়তা করতো।
গত ৩১ মার্চ দুপুরে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সেলিমকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলে ঐ গোডাউনে ডাকে। সেলিমকে মোহাম্মদ আলী তার কথা মত ২ লাখ ৬ হাজার টাকা দেয়। টাকা দেয়ার সময় কর্মচারী সে, লেবার আলী ও আরো একজন সামনেই উপস্থিত ছিলো।
সেলিম টাকা নিয়ে বের হওয়ার সময় আলী তার ঘাড়ে রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে। আঘাতের পরপরই সেলিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। পরে আহত অবস্থায় ৩১ মার্চ রাতেই মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে গোডাউনের একপাশে সেলিমকে বস্তাবন্দি করে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত সেলিম চৌধুরী বক্তাবলীর কানাইনগর এলাকার মৃত শামসুল হক চৌধুরীর ছেলে। সেলিম চৌধুরী শিবু মার্কেট এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতো এবং শহরেই ব্যবসা করে আসছিল। গত ৩১ মার্চ সকালে বাসা হতে ব্যবসার কাজের উদ্দেশ্যে বাহির হয়ে যায়।
ঐদিন বেলা ১১টার দিকে সেলিম চৌধুরীর স্ত্রী রেহানা মোবাইল ফোনে তার স্বামীর অবস্থান জানতে চাইলে সেলিম চৌধুরী জানিয়েছিল সে ফতুল্লার পঞ্চবটি মোড়ে ইস্টার্ন ব্যাংকে রয়েছে। এরপর দুপুর ২টায় খাবার খাওয়ার জন্য ফোন করলে সেলিম চৌধুরীর ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
সেলিম চৌধুরীকে বিভিন্ন স্থানে খোজাখুজি করে না পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারন ডায়েরী যার নং-(১৩৯ তারিখ-০৬-০৪-২০১৯ইং) দায়ের করে তার স্ত্রী।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, গত ৩১ মার্চ থেকেই ব্যবসায়ী সেলিম নিখোঁজ ছিলো। এ ঘটনায় জিডি করা হলে তদন্ত শুরু হয়। মোবাইল ট্রেকিং করে ব্যবসায়ী সেলিমের সর্বশেষ ঝুটের গোডাউনে তার অবস্থান নিশ্চিত করা হয়।
বুধবার দুপুরে ঐ ঝুটের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কর্মচারী ফয়সালকে আটক করা হলে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মাটি খুঁড়ে বক্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।