নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক লন্ডন প্রবাসীর স্ত্রীকে তালাক না করিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় প্রবাসীর পরিবার বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
অপরদিকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার কথা মেয়ের পরিবার স্বীকার করলেও তাদের দাবি নিয়ম মেনে তালাক দেওয়ার পরই বিয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনায় পুরো বন্দরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, বন্দরের এসএস শাহ রোডের মৃত এসএম আজাদের ছেলে আরিফুল ইসলামের সাথে উইলসন রোডের শফিকুল ইসলামের মেয়ে মরিয়ম আক্তারের বিয়ে হয় ২০১৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। সম্প্রতি মরিয়ম আক্তারকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন তার পরিবার।
এ ঘটনায় প্রবাসী আরিফুল ইসলামের মা শিরিনা বেগম বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে তিনি অভিযোগ তুলেন, তাদের ছেলে লন্ডনে চলে যাবার পর পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন মরিয়ম। তারা দাবি করেন, মরিয়মকে তার পরিবারের লোকজন অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন।
শিরানা বেগম জানিয়েছেন, লন্ডন থেকে আরিফুল ইসলাম তার স্ত্রী মরিয়মের খবর নিতে তার শ্বশুরবাড়িতে পাঠালে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মরিয়মকে দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। একই সাথে তারা জানিয়ে দেন, আরিফুলকে তালাকনামা পাঠানো হবে। এক পর্যায়ে মরিয়মের মা, তার ছোট ভাইসহ আরও কয়েকজন মিলে প্রবাসীর মা শিরিনা বেগমকে বাড়ি থেকে নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিয়ে বের করে দেন।
তবে এ ঘটনায় দুই পরিবারের পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি জিডি হয়েছে জানিয়ে বন্দর থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলের পরিবার দাবি করেছেন তাদের পুত্রবধূকে তালাক না করিয়ে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন ছেলের শ্বশুর, শাশুড়িসহ ওই পরিবার। এ অভিযোগ করে ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি হয়েছে। অপরদিকে একই ঘটনাকে কেন্দ্র মরিয়মের পিতা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে পাল্টা একটি জিডি করেন।
শফিকুল ইসলাম তার দায়ের করা জিডিতে জানান, ৫ বছর পূর্বে লন্ডন প্রবাসী আরিফুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার মেয়ে মরিয়মকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় ব্যাংকের মাধ্যমে ছেলের পরিবারকে ১৯ লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিনিময়ে মেয়েকে লন্ডন নিয়ে যাবে। কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ বছর হয়ে গেলেও ছেলে আর লন্ডন থেকে ফিরে আসেনি। এমনকি মেয়েকেও নিয়ে যায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়েছে। টাকা ফেরত চাইতে যাওয়ায় ছেলের পরিবার নানা ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে এবং মেয়েকে নিয়ে বিভিন্ন ফেসবুকে নানা রকম কুৎসা রটিয়ে লেখালেখি করছে।
এদিকে এ ব্যাপারে মরিয়মের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের ২৮ আগস্টে তালাক দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। এরপর থেকেই ছেলের পরিবার নানা ধরণের কথা ছড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আরিফুলের সাথে মরিয়মকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় ২০ লাখ টাকা তাকে ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছিলো মেয়েকে লন্ডন নিয়ে যাবে। কিন্তু ছেলে আসেও না, মেয়েকেও নেয় না। তাই তালাক করিয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি।
এদিকে ছেলের পরিবারের দাবি, কোনো রকম তালাকের কাগজ তারা পাননি। এমনি ছেলের কাছ থেকে টাকা পয়সাও তারা হাতিয়ে নিয়েছে।