নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় নিজের মনোনিত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ করেছেন নির্বাচনে অংশ নেয়া ৭ প্রার্থী।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থীরা এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারী প্রার্থীরা হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী মো.তাবিবুল কাদির তমাল (প্রতীক-আনারস), ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী লায়ন মো.হাবিবুর রহমান হারেজ (প্রতীক-তালা), এডভোকেট স্বপন ভূইয়া (প্রতীক-আনারস), মোতাহের হোসেন নাদিম (প্রতীক-টিউবওয়েল), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাসরিন আক্তার চম্পা (মোতাহের হোসেন নাদিম), হ্যাপি বেগম (প্রতীক-সেলাই মেশিন), শায়লা তাহমিন সিথী (প্রতীক-কলস)।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে নির্বাচনী প্রচারে ৩ জনের একটি প্যানেল করা হয়েছে। এই প্যানেলে তিন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে শাহজাহান (প্রতীক নৌকা), ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ ভূইয়া (প্রতীক-চশমা) এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফেরদৌসী আক্তার নীলা (প্রতীক- ফেরদৌসী আক্তার নীলা (প্রতীক-হাস মার্কা) রয়েছেন। এই তিন প্রার্থী ব্যতিরেকে বাকি প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা, গণসংযোগ ও মাইকিং করার ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ফলে অন্য প্রার্থীরা কোন প্রচার চালাতে পারছেনা। এবং প্রার্থীদের প্রকাশ্যে ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হুমকি-ধমকি, ভয়-ভীতি এবং তাদের সমর্থকদের মারধর করা হচ্ছে। প্রার্থীদের পোস্টার ছিড়ে ফেলে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন সহযোগিতা করছেননা।
কতগুলো ছবি দেখিয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তমাল অভিযোগ করেন, তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ৭টি মাইক ও মাইকের মেশিন ভেঙে ফেলে তাঁর গাড়ির চালককে মারধর করা হয়েছে। এছাড়া তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকি তাঁর নিজের গাড়িতেও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আক্রমন করা হয়েছে।
ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হারেজ অভিযোগ করেন, ১৫ মার্চ মুড়াপুড়া ইউনিয়নের ইছাপুরা এলাকায় হত্যার উদ্দেশ্যে সোহেল আহম্মেদ ভূইয়ার নেতৃত্বে হামলা করেছে। নির্বাচনী সকল প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে।
প্রার্থী স্বপন ভূইয়া অভিযোগ করেন, তাকে মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে নির্বাচনী কাজে বাধা দেয়া হচ্ছে। এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সিথী অভিযোগ করেন, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়াম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের অংশগ্রহণ উন্মুক্ত থাকলেও মন্ত্রী বিভিন্ন গোপন বৈঠক করে আমাদের বাধা দিচ্ছেন। এটি নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি ওই তিন প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার ব্যাপারেও নির্দেশনা দিচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর মনোনিত তিন প্রার্থীর নাম ও প্রতীক খচিত প্রচারপত্র তুলে ধরেন তিনি।
এব্যাপারে নির্বাচন কমিশন বরাবর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রার্থীরা।
এব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.আতাউর রহমান বলেন, ‘রূপগঞ্জের ৭ প্রার্থীর দেয়া অভিযোগটুকু কমিশনে পাঠানো হয়েছে। একটি ব্যবস্থা নিশ্চয়ই নেয়া হবে। হামলা-মামলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসপি সাহেবের সাথেও কথা হয়েছে, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’