নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের বিরুদ্ধে রূপসী সিটি গ্রুপের পণ্য চুরির মামলা দায়ের করেছেন রূপসী সিটি গ্রুপের রূপসী কমপ্লেক্স এ ব্যাবস্থাপক (নিরাপত্তা বিভাগ) মোঃ শাহেদুল আলম শাওন। গত ৩১ মে তারিখে রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন তিনি। মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজ ছাড়াও আসামী করা হয়েছে মোট ছয়জনকে।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, আমি মোঃ শাহেদুল আলম শাওন, জন্ম তারিখ-১৩/১০/১৯৯১ খ্রিঃ জাতীয় পরিচয় পত্র নং-১৯৯১২৬৯৬৪০৬০০১৭৩৪ পিতা-মোঃ খোরশেদ আলম, মাতা-মিসেস শাহনেওয়াজ আলম, সাং- হোল্ডিং নং-৩৭৮/১০ সেনানিবাস, ডাকঘর-পল্লবী-১২১৬, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ডিএমপি, ঢাকা। রূপগঞ্জ থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে লিখিত অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, আমি রূপগঞ্জ থানাধীন রূপসী সিটি গ্রুপের রূপসী কমপ্লেক্স এ ব্যাবস্থাপক (নিরাপত্তা বিভাগ) হিসেবে কর্ম নিয়োজিত আছি। দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের ফ্যাক্টরী হইতে উৎপাদিত পণ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডিও লেটারের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিকট বিক্রয় করা হয়। যাহা ক্রেতাদের ভাড়াটিয়া বা নিজস্ব ট্রাকযোগে পরিবহন করা হইয়া থাকে। গত ২৯/০৫/২০২২ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.০০ ঘটিকার সময় ডিও নং-০২৫১৫২২০৩৮৪৫ ও অপরটি ০২৫১৫২২০৩৮৪৮ তে সয়ামিল ভূষি হাই প্রোটিন (৩০০+৩০০) =৬০০ (ছয়শত বস্তা) ৩০ (ত্রিশ) টন ভূষির ক্রেতা মোঃ তানজির আহম্মেদ (৩৮) পিতা-মৃত রবিউল আহম্মেদ, সাং-রূপসী, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ কর্তৃক প্রেরিত (১) ট্রাক নং সিলেট-ট-১১- ০১৬২ ও (২) ট্রাক নং ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-৩৮১২ আমাদের ফ্যাক্টরীতে চালক (ক) মোঃ মাসুদ (৩০) পিতা- মনসুর হাওলাদার, সাং-মৃধাকান্দি, থানা-কালকিনী, জেলা-মাদারীপুর ও ড্রাইভার (খ) মোঃ পারভেজ (২৫) পিতা- মোঃ সুজন, সাং- কৃষ্ণপুর, থানা-হোমনা, জেলা-কুমিল্লা ট্রাক ২টি পার্কিং করিয়া ১ নং ক্রমিকের ট্রাক চালক ডিও লেটার অনুযায়ী তাহার ট্রাকে ৩০০ বস্তা সয়ামিল ভূষি হাই প্রোটিন লোড করিয়া লোড গাড়ীটি ওজন করিয়া সামনে আগাইয়া রাখে। পরবর্তীতে উক্ত গাড়ীর নম্বর প্লেট খুলিয়া ২ নং ক্রমিকের ট্রাকে লাগাইয়া দেয়। যাহা আগেই ৩৬৮ বস্তা লোড করিয়া ১ নং গাড়ীর পাশে রাখা ছিল। নিরাপত্তা প্রহরী মনিরুল ইসলাম (৩০) পিতা- সামছুল আলম, সাং-মণ্ডলভাগ, থানা- লোহাগড়া, জেলা-নড়াইল দেখিতে পাইয়া বিষয়টি আমাদেরকে অবহিত করিলে আমি এবং অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীগণ আসিয়া বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়া সত্যতা পাইয়া উক্ত ট্রাক ০২টি আটকাইয়া দিয়া চালকদ্বয়কে বসাইয়া রাখিয়া বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। তাহারা এই খামারে আরো খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। আমি এবং আমাদের অন্যান্য কর্মকর্তা খোঁজ খবর নিয়া জানিতে পারি আসামী (১) তানজির আহমেদ (৩৮) পিতা মৃত রবিউল আহমেদ, সাং-রূপসী, থানা- রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ আসামী ২। মোঃ মাসুদ (৩০), পিতা-মনসুর হাওলাদার, সাং-মৃধাকান্দি, থানা-কালকিনী, জেলা-মাদারীপুর, ৩। মোঃ পারভেজ (২৫) পিতা-মোঃ সুজন, সাং-কৃষ্ণপুর, থানা হোমনা, জেলা কুমিল্লা, ও সিটি গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহনুল ইসলাম (৩৫) হোসেন, সাং-প্রাননাথপুর, থানা-আদমদিঘী, জেলা-বগুড়াসহ ডেলিভারিম্যান ৫। দেলোয়ার হোসেন (৪০) পিতা- মোঃ মাইনুদ্দিন, সাং-বরুন, থানা-কাপাসিয়া, জেলা-গাজীপুর, ৬। সায়েদুল ইসলাম (৪৫) পিতা-সিরাজুল ইসলাম, সাং-নবিয়াবাদ, থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লাদের সহায়তায় পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণামূলকভাবে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য কোম্পানির মালামাল কৌশলে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে ডিও লেটারে বর্ণিত মালামালের চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল লোড করিয়া নেওয়ার চেষ্টা করিয়াছে।
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ১ নং আসামী ব্যতীত বাকি সকল আসামীদেরকে পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হইয়াছে। তাহারা উপস্থিত সাক্ষী (ক) মোঃ মহিবুল ইসলাম (৪০) পিতা-এস এম মোশারফ হোসেন, সাং-মির্জাপুর, থানা ও জেলা-নড়াইল, (খ) আল মামুন পনি (২৪) পিতা আব্দুর রহিম বাদশা, সাং-বারদাড়িয়া, থানা-কচুয়া, জেলা-বাগেরহাটদের সামনে আসামীরা স্বীকারোক্তি করিয়াছে। উল্লেখিত আসামীরা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণামূলকভাবে কোম্পানির মালামাল আত্মসাৎ করিয়াছে। ইহাতে আমাদের কোম্পানি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হইয়াছে। আসামীগণ কর্তৃক আত্মসাৎকৃত ৬৮ (আটষট্টি) বস্তা সয়ামিল ভূষির মূল্য অনুমান ২,৫০,০০০/- (দুই লক্ষ পঞ্চাশ) হাজার টাকা। আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে গত ২৯/০৫/২০২২ খ্রিঃ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.০০ ঘটিকার সময় আমাদের ফ্যাক্টরীর মালামাল ডেলিভারির স্থান হইতে উক্ত মালামাল পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণামূলকভাবে বর্ণিত ট্রাক ০২টিতে লোড করিয়া নিয়ে যাওয়ার সময় ২-৬ নং ক্রমিকের আসামী হাতেনাতে ধৃত হয়। আসামীদেরকে থানায় সোপর্দ করিয়া বিস্তারিত ঘটনা মালিক পক্ষকে অবহিত করিয়া থানায় আসিয়া অভিযোগ দিতে বিলম্ব হইল। অতএব, প্রার্থনা এই যে, উল্লেখিত বিষয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে মর্জি হয়।