নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ কতৃক আয়োজিত “গর্বিত সমাজ গঠনে সংস্কৃতি কর্মীদের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার ( ১২অক্টোবর ) রাতে ঢাকা মিডিয়া ক্লাব প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় ।
ঢাকা মিডিয়া ক্লাবের প্রেসিডেন্ট অভি চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূইয়া।
সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. মোঃ জহিরুল ইসলাম লিটন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক এবং স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সেলিনা আক্তার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি এর্টনি জেনারেল এডভোকেট এস এম নজরুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত মুক্তির যে ধারাবাহিক সংগ্রাম, তাতে দেশের সংস্কৃতি কর্মীরা ঝুঁকির পরোয়া না করে কাজ করে গেছেন নিঃশঙ্কচিত্তে৷ দাবি আদায়ের যুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে গান, নাটক, কবিতা৷ শত প্রতিকূলতা ও বৈরিতার মধ্যেও শিল্পীদের অব্যাহত লড়াই একদিকে যেমন প্রেরণা জুগিয়েছিল যোদ্ধাদের, তেমনি এ জনযুদ্ধের প্রতি সারা বিশ্বের জনমত তৈরি করতে রেখেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা৷
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অমূল্য ভূমিকা রেখেছে সেই সময়ের দেশাত্মবোধক ও জাগরণী গান৷ শত বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে এসব গান পৌঁছে যায় কোটি-কোটি মুক্তিকামী মানুষের কানে, বাজতে থাকে রণাঙ্গনের অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাদের রেডিওতে৷ ‘জনতার সংগ্রাম চলবেই’, ‘ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, ‘মানুষ হ মানুষ হ’, ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়, হবে হবে হবে হবে নিশ্চয়’, ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে’– এমন আরো অসংখ্য কালজয়ী গান যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যেও ছিল সঞ্জিবনী সুধার মত। এসব জাগরণী গান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রচারের ফলে বেজেছে শরণার্থী শিবিরে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে ও মুক্তাঞ্চলে৷ সেই উত্তাল দিনের স্বাক্ষী সেসব গান এখন শুধু বাজে বিশেষ দিবসে বা বিশেষ দিবসকে সামনে রেখে৷ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দেখা যায় কেবল ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ এলে৷ কিন্তু মাসব্যাপী অনুষ্ঠান প্রচারের পরই সব আবার ঝিমিয়ে পড়ে৷
বক্তারা আরো বলেন, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অর্থনীতিক মুক্তির পাশাপাশি সামাজিক মূল্যবোধের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ; এরা যদি দক্ষ হয়, সচেতন হয়, মানবিক গুণাবলি অর্জন করে, তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশটা অনেক সুন্দর হবে। সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে যুবসমাজকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ থেকে মুক্ত করে মানবিক করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে সংস্কৃতি কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।