ডেস্ক রিপোর্ট:
শেষ হলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা ভোটের। প্রার্থী ও ভোটারদের এই অপক্ষো করতে টানা দুই দিন (৪৮ ঘণ্টা)। আগামী রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। কোনও বিরতি ছাড়া চলবে ওইদিন ৪টা পর্যন্ত। ওই জনরায়ের ফলে গঠিত হবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নতুন সরকার।
এদিকে, একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে গচ্ছিত আছে যাবতীয় নির্বাচনি সামগ্রী। আগামীকাল শনিবার তা চলে যাবে নির্বাচনি সব কেন্দ্রে।
কমিশন থেকে জানিয়েছে, আদালতের রায়ের কারণে শেষ সময়ে কোনও আসনের জন্য ব্যালট ছাপানোর প্রয়োজন হলে ঢাকা থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তা পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে হেলিকপ্টার।
পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকায়ও হেলিকক্টারের মাধ্যমে নির্বাচন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে বলে কমিশন জানিয়েছে।
নির্বাচনি প্রস্তুতি বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে কমিশনার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় প্রচারণা শেষ হবে। সংসদ নির্বাচনের জন্য আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। এই মুহূর্ত পর্যন্ত যতটা প্রস্তুতি দরকার, সেটা আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। নির্বাচনি সামগ্রীসহ ব্যালট পেপার অনেক আসনে পৌঁছে গেছে। বাকি এলাকাগুলোতে ব্যালট পেপার যেতে শুরু করেছে।’
দেশের সব দলের অংশগ্রহণে এবারের ভোটটিকে উৎসব প্রত্যাশা করা করলেও এটি উৎসবের হবে, না শঙ্কার— তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিপক্ষের হামলা-ভাঙচুরে ভোটের দিনের শান্তির পরিবেশ বিনষ্টের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো এই সহিংসতার জন্য প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করেছে। আওয়ামী ও বিএনপি জোট (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) কমিশনে এসে প্রায়শই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার চেয়েছে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলই অংশ নিচ্ছে। দীর্ঘ ১০ বছর পর মুখোমুখি হতে যাচ্ছে রাজনীতিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তারা উভয়ই জোটবদ্ধভাবে ভোটে অংশ নিয়েছে। একক দল হিসেবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা) সবচেয়ে বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে দলটির ২৯২ জন প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক হাজার ৮০০-র বেশি প্রার্থী। এর মধ্যে ৫০ জনের মতো রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, বাকিরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, এবার ৩০০ আসনে ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার। নির্বাচনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্র ও ২ লাখ ৬ হাজার ৪৭৭টি ভোটকক্ষ রয়েছে। একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে গাইবান্ধা- ৩ আসনে ভোট স্থগিত করে পুনঃতফসিল দেওয়া হয়েছে। ওই আসনে ভোটারের সংখ্যা চার লাখের বেশি।
এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে। ছয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
ভোটগ্রহণ কাজে নিয়োজিত থাকবেন প্রায় সাত লাখ কর্মকর্তা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পাঁচ লাখের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে থাকবেন। এরই মধ্যে সেনা ও নৌবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন।
২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে সারা দেশে মোটরসাইকেল চলাচলে বিধিনিষেধ এবং ২৯ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকে সড়ক ও নৌপথে যানচলাচল বন্ধ থাকবে।