নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১১। গতকাল শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ঢাকার ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র্যাব-১১ এর আদমজীনগর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসময় গ্রেপ্তারকৃত শীর্ষ সন্ত্রসী ও আন্ডার ওয়ার্ল্ডের গডফাদার জাকির খানের দেহ তল্লাশি করে ১টি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে র্যাব।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের অধিনায়ক তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, নারায়ণগঞ্জের একসময়কার শীর্ষ সন্ত্রাসী, একচ্ছত্র, ক্ষমতার অধিকারী আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর গডফাদার এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচিত নাম জাকির খান। যার নামে ৪টি হত্যাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে তিনি ওইসব মামলায় জেল খাটেন। পরে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি আরও দুর্ধর্ষ হয়ে ওঠেন।
তিনি নারায়ণগঞ্জ এর দেওভোগ এলাকায় নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সম্রাজ্য গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে দেওভোগ এলাকার অপর শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে শহরের সোনার বাংলা মার্কেটের পেছনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে শহরের ত্রাস হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
সর্বশেষ ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। এ সময়ে বিভিন্ন মামলায় বিজ্ঞ আদালতে জাকির খান দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত তাকে সাজা প্রদান করেন। এরপর থেকেই গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান ফেরারি হয়ে দেশের বাইরে অবস্থান করছিলেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধান ও আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আসামি জাকির খানের বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ দমন বিশেষ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত মামলায় আসামি জাকির খানের ১৭ বছরের সাজা হয়। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে তার সাজা কমে ৮ বছর হলেও তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে দেশে ও বিদেশে প্রায় ২১ বছর পলাতক ছিলেন। মূলত ২০০৩ সালে সাব্বির আলম হত্যা মামলায় আসামি হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তিনি দীর্ঘ দিন থাইল্যান্ডে আত্মগোপনে ছিলেন এবং সম্প্রতি ভারত হয়ে তিনি বাংলাদেশে আসেন। এরপর থেকে তিনি পরিচয় গোপন করে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করছিলেন।
গ্রেপ্তার জাকির খানের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।