নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার শেষ জনসভাকে ঘিরে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ উৎসবের শহরে পরিণত হয়েছিল ।
দীর্ঘ পনের বছর পর প্রধানমন্ত্রীর নারায়ণগঞ্জের সফরকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতেছিলেন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী – সমর্থকেরা। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে জনতার জনসমুদ্রে পরিনত হয়েছিল ।
শেষ নির্বাচনী জনসভাস্থল ফতুল্লা ইসদাইর শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম মাঠ কানায়-কানায় পূর্ণ ছিল। কোথাও পা ফেলার জায়গা ছিল না।
বৃহস্পতিবার ( ৪ জানুয়ারি ) সকাল থেকেই আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাক, ঢোল পিটিয়ে ফতুল্লা ইসদাইর শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম মাঠে খণ্ড-খণ্ড মিছিল নিয়ে এসে জড়ো হন। হাতে লাল-সবুজ পতাকার সঙ্গে রঙিন পোশাক উৎসবের আমেজ তৈরি করে গোটা এলাকায়।
তিনটার দিকে নৌকার আদলে তৈরি সভামঞ্চে এসে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পতাকা নেড়ে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা। এই জনসভায় নারায়ণগঞ্জ পাঁচটি সংসদীয় আসন থেকেই আসেন নেতাকর্মীরা।
বিশাল এই জনসভায় নেতাকর্মীরা আসেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতীক ‘নৌকা’র প্রতিকৃতি নিয়ে। পুরো জমায়েতে ক্ষণে ক্ষণে ‘নৌকা, নৌকা’ স্লোগানে মাতিয়ে রাখেন তারা।
সরেজমিনে সকাল ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়- নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া, লিংক রোড, জামতলা ও ফতুল্লা পঞ্চবটি পুলিশ লাইনস এবং মাসদাইর অটো অফিস মোড়সসহ আশপাশের এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়ো হতে থাকে।
নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি সংসদীয় আসনের আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মীরা নৌকা, নৌকা স্লোগান নিয়ে মাঠে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীরা। এ সময় মঞ্চ, সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।
জনসভাস্থলের চারপাশে বাঁশ দিয়ে শক্ত বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়েছে। নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলে ঢোকার জন্য পৃথক লেন রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক নারী মিছিল নিয়ে সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ শহর ও ইসদাইর শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্স স্টেডিয়াম মাঠের আশপাশের পুরো এলাকা জুড়েই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। শহরের প্রতিটি মোড়ে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থান লক্ষ করা গেছে।
এদিকে, জনসভাস্থল ও আশপাশের এলাকায় ৬ থেকে ৭ লাখের বেশি জনসমাগম করার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতারা। এজন্য তারা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছেন।
জনসভায় যোগ আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, দেশ আজ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার একান্ত প্রচেষ্টায় দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। দেশ থেকে খাদ্যের অভাব দূর হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে পুনরায় নৌকায় ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানানো ইনশাল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের,নারায়ণগঞ্জ – ৪ আসনের নৌকার প্রার্থীর একেএম শামীম ওসমান, ১ আসনের প্রার্থী গাজী গোলাম দস্তগীর, ২ আসনের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবু, ৩ আসনের প্রার্থী কায়সার হাসনাত, নারায়ণগঞ্জ -৫ জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান,নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজামসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।