নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
১৭ মাস ধরে নিখোঁজ শিশু সাদমান সাকি। ২০১৭ সালের ১লা ডিসেম্বর দেওভাগের নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ হয়ে সে। সেই থেকে ছেলেকে ফিরে পেতে এমন কিছু বাকি নাই যেটা সাকির পিতা সৈয়দ ওমর খালেক এপন করেননি। থানা পুলিশ থেকে শুরু করে মানববন্ধন ও অনশনের মতও বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছেন তিনি। কিন্তু কোন ভাবেই সাকির খোঁজ মিলছেনা।
সাকি মরে গেছে নাকি বেঁচে আছে, তাও জানতে পারছেন না সাকির পরিবার। কিছুদিন পূর্বে এক অনশনে সাকির পিতা এপনের দাবি ছিলো অনেকটা এ রকমই যে, সাকি যদি মরেও থাকে তাহলে তার কঙ্কালটা যেন তাদেরকে ফেরত দেয়া হয়। যা দেখে তারা মনকে শান্তনা দিতে পারবে যে, সাকি বেঁচে নেই।
এদিকে মঙ্গলবার ( ১৪ মে) নিজ সন্তানকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছেন সাকির পিতা এপন। এদিন সকালে জেলা প্রশাসক রাব্বীর মিয়াকে ওই ্আবেদনের একটি অনুলিপিও প্রদান করেন। পরে একই আবেদনের অনুলিপি জেলা পুলিশ সুপারকে প্রদান করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদনে সাকির পিতা বলেন, বিগত ২০১৭ সালের ১লা ডিসেম্বর আনুমানিক দুপুর দেড়টায় আমার বাড়ীর সামনে হতে আমার দেড় বছরের নিষ্পাপ শিশু পুত্র সৈয়দ সাদমান সাকি’কে কতিপয় লোকজন অপহরণ করে গুম করে। এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক আমি নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দিলে কোন এক অদৃশ্যের শক্তির প্রভাবে তারা আমার অভিযোগটি জিডি হিসেবে এন্ট্রি করে।
পরবর্তিতে ঘটনার ১৩দিন পর অর্থাৎ ১৩ই ডিসেম্বর আমার অভিযোগ মামলা হিসেবে আমলে নেয়। মামলা নং ৩২, তারিখ ১৩/১২/১৭ইং। ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০।
তিনি আরও বলেন, অত্যন্ত দু:খের বিষয় মামলা দায়ের করার প্রায় ১৭ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্বেও আজ অব্দি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শান্তনা ও আশ্বাস ব্যতিত আমি আর কিছুই পাইনি। শিশু পুত্রকে উদ্ধারের নিমিত্তে সর্বাত্তক চেষ্টার পাশাপাশি সম্ভাব্য সকলের দ্বারে দ্বারে পাগলের মত আকুতি মিনতি করে কোন প্রকার আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে একজন অসহায় ও হতাশাগ্রস্থ পিতা হিসেবে আজ আমি মানবেতর জীবন যাপন করতেছি। পাশাপাশি দেড় বছরের শিশুপুত্র হারানোর শোকে কাতর হয়ে আমার স্ত্রীও আজ নির্বাক, বাকরুদ্ধ ও প্রায় শয্যাশায়ী। যেন দেখার কেউ নাই। আর তাই কোন উপায় না পেয়ে দু:খে ভরাক্রান্ত চিত্তে আকুতি নিয়ে শিশুপুত্রকে নিজ বুকে ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় শেষ আশ্রয়স্থল তথা আপনার (প্রধানমন্ত্রী) দুয়ারে ভিক্ষাপ্রার্থী হইলাম।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, স্বজন হারানো যন্ত্রণা যে কতটা মর্মান্তিক ও দুর্বিসহ হতে পারে বাংলার বুকে তা আপনার চেয়ে অধিক আর কেই বা জানে। অত্যন্ত দূভার্গজনক হলেও সত্য আপনি নিজেও ৭৫ সালে ১৫ই আগষ্ট থেকে আজ পর্যন্ত স্বজন হারানোর মর্মান্তিক ও দুর্বিসহ যন্ত্রণা বয়ে চলেছেন। আর তাই আমার দেড় বছরের শিশুপুত্রকে একবারের জন্য হলেও আপনার রাসেল ভেবে দয়া করে তাকে উদ্ধারপূর্বক আমার বুকে ফিরিয়ে দেওয়ার নিমিত্তে যথাযত কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করবেন।