নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
সাংবাদিক ও তিতাসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পুথক ঘটনায় প্রতারক চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার ফতুল্লা থেকে রবিবার রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পত্রিকার ভূয়া পরিচয়পত্র, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ভিডিও ক্যামেরা ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করে। সোমবার বিকেলে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন গণমাধ্যমের কাছে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে সেলিম নিজামী, মাসুদ মিয়া, শফিকুল ইসলাম, ইউসুফ, রুহুল আমিন, বাবু সরদার, শরিফ, সাইফুল ইসলাম ও ফয়সাল। তারা রাজধানীর ডেমরা থানার সারুলিয়া এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা সহ জেলার বিভিন্ন থানা এলাকার বাসিন্দা।
ওসি জানান, রবিবার রাতে থানার অফিস কক্ষে চার ব্যক্তি এসে নিজেদের দৈনিক গনজাগরণ ও অপরাধের খোঁজে নামে দুইটি জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেয়। এসময় তারা নানা কৌশলে তার ভিডিওচিত্র ধারণ করে হুমকি দিয়ে ওসিগিরি করতে হলে প্রতি মাসে তাদেরকে বিশ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে।
অন্যথায় মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে তাকে হয়রানী করবে বলে হুমকি দেয়। বিষয়টি সন্দেহ হলে ওসি ওই চারজনের পত্রিকার কাগজপত্র সহ পরিচয়পত্র দেখতে চান। তবে তারা কোন বৈধ কাগজপত্র ও সংবাদকর্মী হিসেবে পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।
পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা নিজেদেরকে ভূয়া সাংবাদিক ও প্রতারক বলে স্বীকার করে। অভিযুক্তরা একই উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের গায়ে “অপরাধের খোঁজে” পত্রিকার ষ্টিকার লাগিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে ভিডিও ধারণ করে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে থাকে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। পরে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে একই দিন (রবিবার) বিকেলে পাঁচ জন ব্যক্তি ফতুল্লা থানার রঘুনাথপুর এলাকায় সুপ্রিয়া বেগম নামে এক গৃহবধূর বাসায় গিয়ে প্রথমে নিজেদের তিতাস গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশনের নারায়ণগঞ্জ অফিসের কর্মকর্তা এবং পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার রান্নাঘরের গ্যাসের সংযোগ সহ চুলা দেখতে চায়।
তখন ওই গৃহবধূ তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তারা গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুমকি দিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ সময় বিষয়টি সন্দেহ হলে গৃহবধূ সুপ্রিয়া মোবাইল ফোনে তার আত্মীয়-স্বজনকে বিষয়টি জানালে তারা এসে পাঁচ প্রতারককে আটক করে। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাদেরকে থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, গ্রেফতারকৃত নয় প্রতারকের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে পুথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।