নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক বলেছেন, প্রত্যেক ধর্মই শান্তির বাণী প্রচার করে, কোন ধর্মই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। তাই আমাদের প্রত্যেককে তার নিজ নিজ ধর্মের অনুশাসন মেনে চলা উচিত, তাহলে সমাজে আর কোন বিশৃংখলা ও অনাচার থাকবে না। থাকবে না মাদক জুয়া আর গ্যাং কালচার, সকলের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হবে।
আসন্ন শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপণ পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে প্রতিটি জেলা শহরে একযোগে আয়োজিত শ্রীমদ্ভগবত গীতা পাঠ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের দেওভোগ রাম সীতা মন্দিরে জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপণ পরিষদের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইউএনও নাহিদা বারিক আরো বলেন, প্রত্যেকটি মানুষ তার প্রথম শিক্ষা পায় তার পরিবার থেকে। পরিবারের বাবা মা যদি তার সন্তানকে পর্যাপ্ত সময় দেন এবং সন্তানের চলাফেরার প্রতি নজর খোঁজ খবর রাখেন তাহলে সন্তান কোনদিন বিপথে যাবে না। সন্তানকে নিয়ে আজ এখানে আগত মায়েরা আজকে ছুটির দিনে আরেকটু বেশী ঘুমিয়ে নিতে পারতেন কিংবা টিভিতে সিরিয়াল দেখতে পারতেন। কিন্তু আপনারা তা না করে সন্তানকে নিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে চলে এসেছেন। এর জন্য সকল মা বাবাকে প্রাণখোলা অভিনন্দন এবং যে সকল ছোট ছোট সোনামনিরা সেই সকাল সকাল এসে এখানে গীতা পাঠের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছো তাদের প্রত্যেকের প্রতি রইলো ভালোবাসা এবং শুভ কামনা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। এদেশ হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান সকলের, আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ। তাই সকল ধর্মের মানুষ এখানে মিলে মিশে বসবাস করে এবং তাদের সকল ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় এবারো ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সাথে শারদীয় দূর্গোৎসব পালন করবো আমরা। ইতিমধ্যেই তার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সকলে একটি উৎসব মূখর দুর্গোৎসবের অপেক্ষা করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেছেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপণ পরিষদ এই প্রথমবারের মতো সারাদেশে একযোগে গীতা পাঠ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপণ পরিষদের এ আয়োজনে যেসক প্রতিযোগী অংশ গ্রহন করেছে এবং তাদের সাথে আগত অভিভাবক প্রত্যেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভগবত গীতা পাঠ আত্মাকে শুদ্ধ করে। আত্মার শুদ্ধতার জন্য নিয়মিত গীতা পাঠ করবে এবং নিজেকে একজন আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। আজ যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছো তারা সবাই খুব ভাগ্যবান কারন আমাদের সময়ে এ ধরনের কোন প্রতিযোগিতা ছিলো না। তাই আজকে এখানে যারা অংশগ্রহন করেছো তারা সবাই বিজয়ী হয়েছো। কেউ মন খারাপ করবে না। আর যারা ১ম ২য় ও ৩য় হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ নিতে যাচ্ছো তাদের প্রতি প্রত্যাশা রইলো এখানকার সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যহত রেখে জাতীয় পর্যায়েও নারায়ণগঞ্জের জন্য শ্রেষ্ঠত্য অর্জণ করে নিয়ে আসা।
সকল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ প্রতিযোগিতায় তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট সত্তর জন্য প্রতিযোগী অংশ গ্রহন করেন এবং ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জণকারী ৯ জন জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করবে। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের গীতা পাঠক পন্ডিত রাম দাশ আচার্য্য ও সারদাঞ্জলী ফোরামের জেলা সভাপতি আশিষ কুমার দাশ। নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে কোন প্রতিযোগী জাতীয় পর্যায়ে সাফল্য আনতে পারলে তাকে সদর উপজেলার পক্ষ থেকে সম্বর্ধনার ঘোষনা দিয়েছেন সদর ইউএনও নাহিদা বারিক।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহার সভাপতিত্বে ও মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জাতীয় পরিষদের সদস্য বাসুদেব চক্রবর্তী, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার দাশ, জেলা হিন্দু সংস্কার সমিতির সভাপতি কমলেশ সাহা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাশ, মহানগর পূজা পরিষদের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, কোষাধ্যক্ষ সুশীল দাস, বন্দর থানা কমিটির সভাপতি শংকর দাশ, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্য প্রমুখ।