নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ ও বিকেএমইএ’র সভাপতি সেলিম ওসমান রেলওয়ের উচ্ছেদে ক্ষতিগ্রস্ত থানকাপড় ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, উচ্ছেদের আগে আমি জানি আমার কাছে খবর আসছে এতগুলো টাকা তুললে এমপি সাহেবকে বলে দিলে এটা হয়ে যাবে ওটা হয়ে যাবে। আসলে এই ব্যপারে আমি আপনাদের প্রথমেই সাবধান করছি যে টাকার বিনিময় জায়গা হবেনা। সরকারি সিদ্ধান্ত ছাড়া জায়গা হবেনা। আপনারা যদি সত্যিই ট্রেড লাইসেন্স বহন করে থাকেন তাহলে আপনাদের পুনর্বাসন করার দায়িত্বটা হচ্ছে সিটি করপোরেশনের। রেললাইনের পাশে ৪৫ ফুট (ভেঙে দেওয়া জায়গা) এর পরেও আরো ২৫ ফুট জায়গা আছে সেই জায়গার নকশা নিয়ে যদি সিটি করপোরেশন কাজ করে তাহলে আমি তাঁদেরকে সহযোগিতা করবো। আপনারা যদি আপনাদের ট্রেড লাইসেন্সসহ আবেদন করেন যে, আমরা এতোজন ব্যবসায়ি আছি আমরা সকলে নিস্ব হয়ে গেছি। আমাদেরকে ১০ কিংবা ২৫ বছরের জন্য একটা বরাদ্দ দিন মাননীয় রেলমন্ত্রী। সেই সুপারিশ পত্রটা আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে পারি। এর বাইরে আমি অন্য কিছু করতে পারবোনা। আইনকে আইনের জায়গায় থাকতে দিন; আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন সেটা প্রমানিত করেন যে আপনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আমি বলিনা কারো নামে নালিশ দেন। আপনা এখানে বৈধ ব্যবসা করেছেন; আপনাদের কাছে একটা কাগজ আছে। আমি কিন্তু বলিনি আপনাদের পক্ষ্য থেকে বলা হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স, টিন নম্বর, ট্রেক্স পেইড এটা যদি হয় তাহলে আমি দরকার হয় যুদ্ধ করবো আপনাদের পুনর্বাসন করার জন্য।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকাল এগারোটায় চাষাঢ়ার রাইফেল ক্লাবে থানকাপড় ব্যবসায়ীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই কথা বলেন।
সাংসদ বলেন, সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী যদি কোথাও কোন ব্যবসা বাণিজ্য হয় তাহলে সেখানে একটা ট্রেড লাইসেন্স লাগে। আর ট্রেড লাইসেন্স তখনই হবে যদি আপনার জায়গাটা বৈধ হয়। নাহলে যিনি ট্রেড লাইসেন্সটা যিনি দিয়েছেন তিনি অপরাধী। কারণ বৈধ জায়গা ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স দেয়া যায়না এবং আপনি যদি সেখনে বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে থাকেন তাহলে সেটাও অবৈধ। আপনারা (থানকাপড় ব্যবসায়িরা) একটা কথা বলেছেন যে বাসাবাড়ি বন্ধক রেখে, এরপর আপনারা ব্যবসা করছেন! আপনাদের দোকান বৈধ ছিলোনা তাই আপনারা বাধ্য হয়েছেন বাসাবাড়ি বন্ধক রেখে ব্যবসা করতে। সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী দোকান বন্ধক হয়েই লোন হয়।
এই ব্যবসায়ীক নেতা আরো বলেন, এই সমস্ত জায়গায় (ব্যবসায়ীক এলাকায়) কিছু মোড়ল থাকে যাদের দালাল বলা হয়। তাঁরা বিভিন্ন সময় বলসে যে, রেলওয়ের সাথে লাইন করছি; এই করছি সেই করছি..। আমার জানা আছে এখানে বেশকিছু দালাল আছে যারা আপনাদের আশা দেখাচ্ছে যে, এমপি সাহেব যদি বলে রেললাইন তৈরীর জন্য একপাশে ৪৫ ফিট অন্যপাশে ৪৫ ফিট জায়গা লাগবে এবং এগুলো চাইনিজ কম্পানিকে দিলে তাঁরা রেললাইন বানাবে। আসলে রেললাইন বানানোর দায়িত্বটা কিন্তু বর্তমান সরকারের কাছে সরকার কিন্তু আমার আর আপনার বাড়ির উপর দিয়ে রেললাইন তৈরী করছেনা। রেলওয়ের জায়গাতে তৈরী করছে। আর রেললাইন তৈরীর পর আবার তাঁরা চিন্তা করবে যে পাশদিয়ে একটা রাস্তাও তৈরী করতে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চিন্তা করি যে দুই পাশদিয়ে যেন দুইটি রাস্তা হয় তাহলে যানজটও কমবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমরা যেহেতু জানিনা, তাই আমাদের হোঁচট খেতে হয়েছে। প্রচন্ড ভাবে হোঁচট খেয়েছি। কোন সরকারি অফিসার যদি বলে এমপি সাহেব বললে হয়ে যাবে ওই বেডারে বাইন্দা রাইখা দিবেন। আর কোন লোক যদি বলে আমারে ৫ হাজার টাকা দাও ১০ হাজার টাকা দাও আমরা এই কাজটা করে এনে দিবো তারে আরো ভালো ভাবে বান দিবেন। কারন এমন কোন মায়ের ছেলে জন্মায়নি যে টাকার বিনীময়ে সরকারের কাছ থেকে জায়গা নিয়ে আসবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বাংলাদেশ হোসিয়ারি এসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি এম সোলায়মান, বিকেএমইএর পরিচালক মো.কবির হোসেন, হাজী মোহাম্মদ (রনি) খোকনসহ সকল থান কাপড় ব্যবসায়ীবৃন্দ ।