নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, লজ্জাজনক হলেও সত্যি বিদেশীদের ষড়যন্ত্রে আমরাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেছি। এখন যতই মায়াকান্না করি, গান গাই না কেন সত্যিটা হচ্ছে আমরাই খুনি। আগে খন্দকার মুশতাকরা ধীরে ধীরে তৈরী হতো। সংখ্যায় থাকতো কম। এখন খন্দকার মোশতাক তৈরী হতে বেশি সময় লাগে না। এখন প্রতি জেলায় এমনকি থানা পর্যায়ে খন্দকার মোশতাক তৈরী হয়ে আছে। এখন খন্দকার মোশতাক তৈরী হতে বেশি সময় লাগে না
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) বিকেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে শহরের নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যূরাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি না থাকলে কারও কিছু যায় আসে না। আমি আল্লাহকে শপথ করে বলতে চাই আমি ভয় পাচ্ছি। বাংলাদেশে স্বপ্ন দেখার মত আর কেউ নেই। তাই টার্গেটও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) একা। আমার বাবা ও মনসুর আলী চাচা এক রুমে ছিলেন। তাকে ওযু করতে দেয়নি। পাশের রুমে নিয়ে তাদের অফার করা হয়েছিল। তারা বলেছিল আমরা মরে প্রমান করতে চাই আমরা শেখ মুজিবের লোক। পরে তাদের হত্যা করা হয়। আমি এখন আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি না। আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি। শেখ হাসিনা এখন শুধু আওয়ামী লীগের নয় তিনি এখন সকলের। তিনি বলেন, মাত্র ৩১ বছর বয়সে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন। তাকে তার ৩২ নম্বরের বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয়নি। আজকে অনেকে মানবাধিকারের কথা বলে। সেদিন আবারও আসতে পারে। ষড়যন্ত্র এখনও হচ্ছে, আমি জাতির পিতার দুই কন্যার জন্য দোয়া চাচ্ছি এবং নিজের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।
শামীম ওসমান বলেন, সামনে আমাদের কঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে। দেশের ভেতরে গভীর ষড়যন্ত্র হয়ে গেছে। আমি কোরআনটা এ্যানালাইসিস করে পড়েছি, গত একুশ বছর ধরে পড়ি। শেখ হাসিনা এতিম, আল্লাহ এতিমদের হেফাজত করেন। এখানে আমাদের ছেলেদের গুলি করে মারা হয়েছিল৷ লাশ নিয়ে পার্টি অফিসে শ্রদ্ধা জানাতে এসেও হামলার শিকার হলাম৷ সেখানেও আমাদের গুলি করা হল। সেই লাশ থেকে আমরা সত্তরটা গুলি বের করেছিলাম।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে আমাদের ওপর বোমা হামলা হল। তখন আমার কথা অনেকে বিশ্বাস করেনি৷ ২০০৪ সালে ঠিকই শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হল। সেদিন যদি গ্রেনেডটা ট্রাকে ফুটতো তাহলে আজ কি কেউ বেঁচে থাকত? থাকত না।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাজনীতি ছেড়ে চলে আসতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম আমাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তিনি (শেখ হাসিনা) বললেন আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন এ দেশ সোনার বাংলাদেশ হবে, আমরা ক্ষুধামুক্ত হতে পারব।
শামীম ওসমান বলেন, আমাদের দুটো পয়েন্টে সকলকে এক হতে হবে। এক পররাষ্ট্র নীতি আরেকটা অর্থনীতি। কিন্তু আমি দেখি কিছু সুশীল যারা দেশ বেঁচে খায়। এই পুলিশ ও র্যাবের ওপরে যখন কোন রাষ্ট্র একটা কিছু করেছে। আমরা সেটা ডিপ্লোমেটিক ভাবে মোকাবিলা করব। কিন্তু যখন আমাদের অপমানিত করা হল তখন অবাক হয়ে দেখি আমাদের দেশের কিছু লোক হাততালি দেয়। এরা কারা। তারা নারায়ণগঞ্জেও এসে মিটিং করে। এ ব্যাপারটা আমাদের দেখা উচিত।
এময় নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মো: জায়েদুল আলম, র্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক এ কে এম মনিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি আসিফ হাসান মাহমুদ, জেলা বারের সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল প্রমুখ।