নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এড. তৈমুর আলম খন্দকার বলেছেন, দুটি কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না। হয়ত তাকে জেলখানায় রেখে অপচিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দেশনেত্রী বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিলে শেখ হাসিনা অপচিকিৎসার গোমর ফাঁস হয়ে যাবে এই ভয়ে তাকে বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না। চিকিৎসার কারনে তিনি দিন দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন।
তিনি বলেন, একদিন ক্ষমতায় আপনিও থাকবেন না, আপনাদেরও হাইকোর্টের বারান্দায় জামিনের জন্য দাড়াতে হবে। আপনাদের চিকিৎসার জন্য আবেদন করতে হবে। আমরা কথা দিচ্ছি, আপনার যখন চিকিৎসার প্রয়োজন হবে তখন আপনার সাথে এরূপ আচরণ করা হবে না। আপনারা যে আচরণ করেছেন আমরা সেরকম আচরণ করবো না।
সোমবার (২২ নভেম্বর) খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবীতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন। এর আগে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকেল তিনটায় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশে যোগ দিতে আশেপাশের এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। পরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিতে গেলে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। পরে প্রেস ক্লাবের পাশে চাষাঢ়া বালুরমাট এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে দলটির নেতাকর্মীরা।
এসময় তৈমুর আলম খন্দকার আরও বলেন, আমাদের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আছেন। নিজ পছন্দ মত চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের আছে। আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা কিছু হলেই বিদেশে চলে যায় চিকিৎসার জন্য। বাংলাদেশের চিকিৎসা যদি এত উন্নতই হত তবে হাজার হাজার লোক মন্ত্রী মিনিস্টাররা কেন দেশের বাইরে যান চিকিৎসার জন্য।
তিনি বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। পাকিস্তান আমলে দেখেছি ভুট্টো বলেছিল, উই কেন নট গো বিওন্ড দা কনস্টিটিউশন অফ পাকিস্তান। সে বলেছিল আমরা পাকিস্তানের শাসনব্যবস্থার বাইরে যেতে পারি না। ঠিক সেই ভাষায়, সেই চোহারা নিয়ে আনুসল হক বলে আইনে বাধা, যেতে পারবেন না। আইন কী এটার ব্যাখ্যা আমরা জানি। আপনারা আমাকে বলতে শোনেন আমি বিভিন্ন টকশোতে ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আইনমন্ত্রী মহদোয়কে বলছি, আপনি যদি পারেন এর ব্যাখ্যা দেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার উদ্দেশ্যে বলতে চাই। আপনি সংবিধানের ১৪৮ ধারা মোতাবেক শপথ নিয়েছেন। আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আ’লীগের সভানেত্রী হিসেবে আপনি যা খুশি করতে পারেন। কিন্তু সংবিধানের ১৪৮ ধারা মোতাবেক আপনি আপনার মন মত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এভরি একশন হ্যাজ এ অপজিট রিএ্যাকশন। সে রিএ্যাকশনে আপনারাও পড়বেন।
সমাবেশ শেষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য-রোগমুক্তি কামনা করে মোনাজাতে দোয়া করেন তৈমুর। এসময় নেতাকর্মীরা নেত্রীর কারামুক্তি ও রোগমুক্তির জন্য দোয়া চেয়ে মাতম করতে থাকেন। এসময় মোনাজাতে তৈমুর বলেন, আল্লাহ আপনি সর্বশক্তিমান। আপনি আমাদের নেত্রীকে সুস্থ করে দিন এবং দেশ ও জাতির জন্য কাজ করার তৌফিক দান করেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৈমুর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, লুৎফর রহমান আব্দু, সদস্য এড. আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, মোশারফ হোসেন, ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, জুয়েল আহমেদ, একরামুল কবির মামুন, রুহুল আমিন, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, কাজী নজরুল ইসলাম টিটু, রহিমা শরীফ মায়া,জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন চৌধুরী সালামত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহমুদুল্লাহ লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক প্রমুখ।