নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাংসদ একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের গালি দেক কোন সমস্যা নাই কিন্তু নারায়ণগঞ্জের রাজপথে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করবে। একদম স্পষ্ট কথা এগুলো সহ্য করবো না। এগুলো মেনে নেওয়ার মত না।
অন্তত আমরা মেনে নিতে পারবো না। আমরা যারা ৭৫ এর পরে রাজনীতিতে এসেছি তারা শেখ হাসিনাকে মায়ের দৃষ্টিতে দেখি। ওরা আমাদের মাকে নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করবে, এটাতো আমরা মেনে নিব না। এমন কর্মকাণ্ড আমরা মেনে নিতে পারি না।
তাই মনে হয়েছে এবার ঘণ্টা বাজানোর সময় এসেছে। কারণ দেশের সবগুলো আন্দোলন শুরু হয়েছে এ নারায়ণগঞ্জ থেকে। তাই নারায়ণগঞ্জেই আমাদের ঘণ্টা বাজাতে হবে।
আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগর সমাবেশ হবে। সেদিন নারায়ণগঞ্জের মানুষ দেখিয়ে দেবো নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল আছে এবং থাকবে। আপনারা ১৬ তারিখ দেখিয়ে দেবেন, আমরা ঘন্টা বাজিয়ে এমন আওয়াজ তুলব, যা সারাদেশে বেজে উঠবে । আর বলে রাখি আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাই হবেন সরকার প্রধান।
স্বাধীনতা বিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তির বিরুদ্ধে “দেশ বাঁচাও” স্লোগানে দেশ প্রেমীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে সোনারগাঁ আওয়মী লীগের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সারের সার্বিক তত্বাবধানে তার বাসভবনের সামনে, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের সঞ্চালনায় এ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন. ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধারা স্লোগান দিয়েছিলেন, ‘বীর বাঙালী অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’ আর আজকে আমাদের ¯ স্লোগান ধরতে হয়, ‘বীর বাঙালী ঐক্য গড়ো, বাংলাদেশ রক্ষা কর। এখন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী পা গেড়ে বসে আমার নেত্রীর সাথে কথা বলে। আপনাদের শিখতে হবে। আমেরিকার রাষ্ট্রপতি সেলফিও তোলে। এগুলো সাবজেক্ট না। সাবজেক্ট হল বাংলাদেশের মানুষ তাকে বিশ্বাস করে।
তিনি বলেন, আমার রাজনীতি করার কথা ছিল না। বঙ্গবন্ধু সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে নিন্ম আয়ের দেশে নিয়ে আসলেন। আর আমরা তাকে নির্বংশ করে দিলাম দুটো মেয়ে বাঁচল। শেখ হাসিনা আর শেখ রেহানা। সেই শেখ হাসিনা প্রতিশোধ নেননি। একুশ বছর আমরা সংগ্রাম করেছি।
শেখ হাসিনার মত আল্লাহওয়ালা দেশপ্রেমিক আমি খুব কম দেখেছি। ওরা হাওয়া ভবন খাওয়া ভবন করে লুটপাট করল। আগে এ দেশে কেউ আসত না। এখন দেখি সকালে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিকেলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আসে। কারণ শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
তিনি বলেন, আমরা কখন বড় হয়েছি টের পাইনি। জীবন কেটেছে মসজিদের ছাদে শুয়ে শুয়ে। বিয়ে করতে গিয়েও গ্রেপ্তার হয়ে গেলাম। কোনরকমে হাত পা ধরে ছাড়া পেয়েছি। আমার প্রথম বাচ্চা হল সেটাও জেল থেকে শুনলাম। আর যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকত, আমরা কত আগে জাপানের মত দেশ হতাম।
তিনি বিএনপি নেতা কর্মীদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, সকালে ঠিকমত জোরে কাশি দিলে নারায়ণগঞ্জ শহর ফাঁকা হয়ে যাবে অর্ধেক। অথচ তারাই এখন কাঁচের ঘরে থেকে আমাদের নিয়ে নানা ধরনের কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জে একজন আছে পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট।
তিনি বলেছেন পুলিশ ছাড়া নামতে। আমি পুলিশের কাছে অনুরোধ করছি আপনাদের যত পুলিশ আছে, সব তাদের পক্ষে যান। সব নিয়ে ঘোষণা করেন পুলিশ আমাদের পক্ষে আছে। তারপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ছাড়া করে দিব।
শামীম ওসমান বলেন, রাজনীতিতে কিছু হিসাব নিকাশের বিষয় আছে। আমি যে সব জানি তা না। তবে খোঁজ খবর রাখি। ওরা ষড়যন্ত্রের খেলায় মেতে উঠেছে। ওরা তারাই যারা স্বাধীনতার সময় ত্রিশ লাখ মানুষের জীবন নিয়েছিল। দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম নিয়েছিল। ওরা ইসলামের কথা বলে মানুষ জবাই করেছিল।
আমরা কি এই জন্য মাঠে নামবো, না এই জন্য মাঠে নামবো না। নামবো স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির জানান দিতে। কী লজ্জা আমাদের? মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন দেশ রক্ষা করতে আমাদের এক হতে হয়। এই বয়সে মুক্তিযোদ্ধাদের রাস্তায় নেমে স্লোগান দিতে হয়।