নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলছি না। আমরা অনেকেই অনেকই অনেক দল করতে পারি। বহুদিন আগে একজন নেত্রী নবীগঞ্জে এসে ইলেকশন করার জন্য একটি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে দিয়ে গেছেন। ওইটা কিন্তু ওই পর্যন্তই শেষ। আবার একজন সাবেক এমপি বলেছেন নারায়ণগঞ্জে যা উন্নয়ন হয়েছে সেটি সরকারী প্রক্রিয়াতেই হয়েছে। আরেকজন সাবেক এমপি তো উন্নয়ন চোখেই দেখেন না। আপনি নির্বাচন করতে চান এলাকায় আসেন। ইলেকশনে টাকা খরচ করবেন কেন? এলাকার গরীব মানুষদেরকে সহযোগীতা করেন। আর পোষ্টার! রঙিন রঙিন পোষ্টার। ওরে বাপরে বাপ। কই সেলিম ওসমানের কোন পোস্টার দেখছেন আপনারা? ঈদের আগে থেকে সালাম দেওয়া শুরু হইছে। একটা পোষ্টারের টাকায় একজন এতিমের সারাদিনের খাবার হয়ে যায়। লজ্জা করে না আপনাদের পোস্টার লাগাতে? বাসের পেছনে ট্রলারে আপনারা কি? আপনারা কি? নারায়ণগঞ্জের মানুষ আপনাদের খতিয়ান জানে কিন্তু। এস.এ পরচা, আর,এস পরচা আপনাদের সবই নারায়ণগঞ্জের মানুষের জানা আছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ তো ক্ষেপে না। যদি একবার ক্ষেপে তাহলে বুঝতে পারবেন। যেখানকার মানুষ সেখানেই চলে যাবেন। একটু ধৈর্য্য ধরেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি বলে থাকেন তাহলে দিবেন। এতো ব্যানার এতো এতো পোস্টার এখন সিটি কর্পোরেশন কিছু বলে না, এতো পোস্টার কেন? ইলেকশনের নিয়মনীতি অনুযায়ী তো আপনি রঙিন পোস্টার বানাতে পারবেন না। একজন তো বন্দরে শুরু করে দিছেন। উনি সমরক্ষেত্র নিয়ে যান মিটিং করার জন্য। সমরক্ষেত্র কোন রাজনৈতিক জায়গা না। ওইটা মুক্তিযোদ্ধাদের জায়গা। যে জায়গায় শুধুমাত্র আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী, মৃত্যুবার্ষিকী, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস সহ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী পালন করে থাকি। উনারা ওইটা দখল করে নিতে চান।
শনিবার ৬ অক্টোবর দুপুর ১টায় বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন ময়মনসিংহপট্টি এলাকায় বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি সেলিম ওসমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ৭৫’র ২১ বছর জয়বাংলা বলতে পারি নাই। রাজাকারের গাড়িতে পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে এই বাংলাদেশে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সেই সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছেন। আজকে উদ্বোধন হওয়া কমপ্লেক্সের জায়গাটি একজনের দখলে রয়েছে। উনাকে ১ মাসের সময় দেওয়া হয়ে ছিল জায়গাটি খালি করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু এখনো তিনি করেন নাই। আমি একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে আরো ৪ দিনের সময় দেওয়া হলো সময়। এরপর আর সম্মান দেখানো সম্ভব হবে না।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাইয়েরা একটু ধৈর্য্য ধরবেন। আপনারা যারা জীবিত আছেন আর যারা মারা গেছেন তাদের সবার নামের তালিকা আমাদের কাছে পাঠাবেন। আমরা সেই ভাবেই কাজ করছি যাতে করে আপনাদের পরে আমাদের ছেলে, মেয়ে নাতি নাতনিরা ভবন গুলো ব্যবহার করতে পারে।
জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোটেক হোসনে আরা বেগম বাবলী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে গৃহিত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে আবারো শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর আহবান রাখেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বলেছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন। দেশের ৬৪ জেলায় প্রতিটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে দেশে যে উন্নয়ন হচ্ছে সেই উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আবারো শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে।
বন্দর উপজেলার নির্বার্হী কর্মকর্তা(ইউএনও) পিন্টু বেপারীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য অ্যাডভোটেক হোসনে আরা বেগম বাবলী, জেলা প্রশাসক রাব্বি মিঞা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বন্দর উপজেলার সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ। আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শাহীন মন্ডল, সদর উপজেলা কমান্ডার শাহজাহান ভূইয়া জুলহাস, মহানগর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, যুগ্ম আহবায়ক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, ২২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের এহসান উদ্দিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, মহানগর যুবলীগ নেতা শামসুল হাসান প্রমুখ।