নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ : নারায়ণগঞ্জের বাজার গুলোতে মুরগি ও ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে মাছের। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৩০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। ডিম ও মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আরোও দাম কমবে এই সপ্তাহেই।
শুক্রবার ( ২৬ আগস্ট) শহরের দিগুবাবুরবাজার, কালীরবাজারের কাঁচা বাজার ঘুরে বাজারের এ চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর প্রতিটি বাজারে কমেছে ডিম ও মুরগির দাম। তবে বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম কিছুটা কমলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি, মাছ ও ভোজ্যতেলের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত ।
ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজিতে ৫ টাকা কমে গেছে। খামারি পর্যায়ে ১৩৫-১৩৫ টাকা দাম হলেও তা খুচরা বাজারে এসে ১৬৫ টাকা কেজি হয়ে যায়।
দিগুবাবু বাজারের ডিম ব্যবসায়ী সেলিম মাহমুদ বলেন, ডিমের দামে খামারিরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। খাবারের দাম বেশি থাকলে লাভ কিছুটা কম হয়। লাল ডিম পাইকারিতে হালি ৩৮ টাকা টাকা আর সাদা ডিম ৩৬ টাকা দরে বিক্রি করছি।
বেড়েছে মাছের দাম। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভোক্তারা। দেখা যায়, মাছের বাজারে কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে বড় ইলিশ ১৭০০ টাকা ও ছোট ইলিশ ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ২০০ টাকা বেড়ে বড় চিংড়ি ২ হাজার টাকা ও দেশি চিংড়ি ১০০ টাকা বেড়ে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আইড় মাছের দাম ১০০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকা, ২০০ টাকা বেড়ে গুচি ১২০০ টাকা, ১০০ টাকা বেড়ে বাইং মাছ ৮০০ টাকা ও ৩০ টাকা বেড়ে রুই মাছ ২৫০ টাকা ও সিলভার কার্ফ ১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে পাবদা মাছের দাম, বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দাম কেজিতে ৩০-২০০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিম্ন আয়ের মানুষরা।
দিগুবাবু বাজারের মাছ কিনতে আসা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আগে যা বেতন পেতাম এখনো তাই। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আজ মাছের বাজারে এসে তো পুরোপুরি মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ মাছের দাম কেজিতে ৩০-২০০ টাকা বেড়েছে। এভাবে যদি প্রতি সপ্তাহে মাছের দাম বাড়ে তাহলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের মাছ খাওয়াও ছেড়ে দিতে হবে।
ফারজানা আক্তারও মাছ কিনতে এসে পড়েছেন বিপাকে। তিনি বলেন, বাজারে এসে দেখি গত সপ্তাহের চেয়ে মাছের দাম আবার বেড়ে গেছে। কিছু বলার নাই। তাই যেখানে দুই কেজি মাছ কিনতাম সেখানে হয়তো এক কেজি কিনবো। আমাদের খেয়ে তো বাঁচতে হবে।
দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাছ বিক্রেতা কাশেম মিয়া বলেন, বৃষ্টি ও মেঘের কারণে জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। ফলে বাজারে মাছ কম আসছে। আর আমদানি কম থাকার কারণে আমরা চাহিদা অনুযায়ী মাছ সরবরাহ করতে পারছি না। তাই মাছের দামটা একটু বেশি।
এদিকে, মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কমেছে। দিগুবাবু বাজারের মুরগি দোকানদার আলী হোসেন বলেন, ব্রয়লার মুরগি আগের সপ্তাহের চেয়ে ২৫ টাকা কমে ১৬৫ টাকা কেজি, অপরিবর্তিত থেকে সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা কমে লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮ টাকা হালি এবং সাদা ডিম ৩৬ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০ টাকা এবং রসুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আদার দাম পড়ছে ৯০ থেকে ১১০ টাকা।
প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা আবং প্যাকেট চিনি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি মসুরের ডাল ১৩০ টাকা এবং ভারতীয় মসুর ডালের দাম লাগছে ১১০ টাকা।
খোলা আটার দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকায়। ২ কেজির প্যাকেট আটার দাম পড়ছে ১১৫ টাকা। এ ছাড়া বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ৭ টাকা বাড়ানোর পর আগের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির বাজার। কিছু কিছু সবজির দাম কমেছে বলেও জানান বিক্রেতারা। আগের মতোই বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ফুলকপি ১০০ টাকা, করলা ৬০, আলু ৩০, শসা ১০০, টমেটো ১২০ এবং কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। অপরিবর্তিত থেকে গরু ও খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা ও ৮৫০ টাকা কেজিতে।