নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, পূর্বের মতো এখনো শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশি-বিদেশিরা এই ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশকে সিরিয়া- আফগানিস্থান বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিলো। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে সেই চেষ্টা ব্যার্থ হয়েছে। আমরা যারা ৭৫ এর পরে রাজনীতিতে এসেছি তারা বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের দাবিতে রাজনীতি শুরু করি।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামিলীগ এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজনে এক জনসভায় সভাপতি হিসেবে বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব এ কথা গুলো বলেন।
তিনি বলেন, ২০০১ এর ১৬ জুন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলা হয়। সেখানে আমাদের দলের অনেক লোক মারা যায়। মূল লক্ষ্য ছিলাম আমি। কিন্তু তখন আমি একটি কথাই বলেছিলাম, আমার নেত্রীকে বাঁচান। গত তিন ধরে শুনছি আবারো আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে। আমি এখনও বলবো, এই দেশকে বাঁচাত হলে শেখ হাসিনাকে দরকার। কারণ তিনি আমাদের আগামী প্রজন্মকে এক সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। শেখ হাসিনা নামটা হলো আগামীর উন্নত বাংলাদেশ।
শামীম ওসমান আরো বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে অনেকেই আওয়ামীলীগ করেন। কিন্তু তারা আওয়ামীলীগের জনসভায় আসেন না। তারা মোশতাকের অনুসারী। তারা পেছন থেকে ছুড়ি মারতে চায়। আমি যারা আওয়ামীলীগ করি তারা বিএনপি-জামায়াতকে ভয় পাই না। তারা যদি দশ হাজারও আসে সেখানে আওয়ামীলীগের কয়েকজনই যথেষ্ট তাদের প্রতিহত করার জন্য। ভয় পাই শুধু মোশতাকদের অনুসারীদের নিয়ে।
তিনি আরো বলেন, ২১ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। আমাদের স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখুন, তিনিই আমাদের স্বপ্ন। অক্টোবর নাগাদ ওরা মানচিত্রে থাবা দেবে; ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য ওরা এটা করবে।
নারায়ণগঞ্জে অনেকে আওয়ামী লীগ সাজতে চান। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে নামে না মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন, মোশতাক বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমাদের বাসায় ফোন করেছিল। আমার মা সেদিন খুনি মোশতাককে বলেছিলেন, সে (শামীম ওসমানের বাবা) যদি আপনার মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়, প্রথমে চেষ্টা করব তাকে হত্যা করতে। নয়ত নিজে আত্মহত্যা করব। আমি সেটার সাক্ষী। মনসুর আলী যে রুমে ছিলেন, আমার বাবাও সেখানে ছিলেন। তাকে অজু পর্যন্ত করতে দেয়নি।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দুই হাত উপরে তুলে কাঁদছিলেন। বলেছিলেন—আমার বাবা-মাকে যেখানে মেরেছে, সেখানে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে চাই। তারা সেখানে নফল নামাজ পড়তে দেয়নি। যারা আমাদের জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের সাথে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারব না। আমরা আমাদের বাংলাদেশকে বাঁচাতে চাই।
নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ন হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলার চেয়ারম্যান এড. শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক এমপি সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাত, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপু, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।