নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ : বৈরী আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে করোনার মহামারি টানা ২বছর পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে নারায়ণগঞ্জ শহরের নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার ( ৩ অক্টোবর ) বেলা ১১টায় শহরের মিশনপাড়া এলাকায় নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে কুমারী দেবীকে অঞ্জলি দেওয়ার মধ্য দিয়ে পূজা অর্চনা শুরু হয়।
এদিকে সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কয়েক হাজার পূজারি ও ভক্তবৃন্দ নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন এসে জড়ো হয়। জাঁকজমকপূর্ণভাবে মহাষ্টমীর কুমারী পূজা পালন করেন। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ কুমারী পূজায় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঢল নামে।
এবারের কুমারী পূজায় দেবীর আসনে বসিয়ে পূজা দেওয়া হয়েছে দেওভোগ ভূইঁয়ারবাগ এলাকর বিদ্যা নিকেতন হাই স্কুলের ১ম শ্রেনীর ছাত্রী ৭ বছরের কন্যা মিষ্টু চক্রবর্তী। মিষ্টু চক্রবর্ত্তী শহরের দেওভোগ এলাকার কাশ্যপ গোত্রের দিপংঙ্কর চক্রবর্তী ও সম্পা রাণী চক্রবর্তীর মেয়ে। ঢাকঢোল ও শঙ্খ বাজিয়ে অঞ্জলি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কুমারী দেবীকে বরণ করেন ভক্তরা। এরপর দেবীর কাছে সবাই প্রার্থনা করেন। কুমারী পূজা পরিচালনা করেন নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী একনাথানন্দ মহারাজ।
কুমারী পূজা সম্পর্কে মহারাজ বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ শারদীয় দুর্গোৎসবে এ কুমারী পূজার প্রচলন শুরু করেন। দেবীকে জাগতিকভাবে পূজা করতে শত বছর ধরে এ কুমারী পূজা পালন করা হচ্ছে। সনাতন ধর্মের নিয়ম অনুসারে দেবীকে শিশুরূপে মায়ের আসনে পূজা করা হয়।
আশ্রমে পূজায় অংশ নিতে আসা কয়েকজন পূজারি ও ভক্তবৃন্দ জানান, গত দুই বছর করোনা মহামারীর জন্য নারায়ণগঞ্জে কুমারী পূজা হয়নি। এবার জমকালো আয়োজনে কুমারী পূজা উদযাপন করবো কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছুটা আনন্দে ভাটা পড়েছে । তারপরও প্রতি বছর এই দিনে মায়ের পূজার অংশ নেওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকি। মায়ের পূজায় অংশ নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো আমাদের সমাজ, ঘর এবং দাম্পত্য জীবন যাতে ভালোভাবে কাটে। এজন্য মায়ের আশীর্বাদ নিই।
দীর্ঘ দুই বছর পর মা দুর্গাকে পেয়ে আনন্দের সঙ্গে বরণ করে নিচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মায়ের কাছে তাদের প্রত্যাশা, মা যেন সবার মনের বাসনা পূর্ণ করেন। দেশ থেকে সন্ত্রাস, রাজনৈতিক অস্থিরতা, হানাহানি দূর করে সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আমলাপাড়া সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, দেওভোগ নাগমহাশয় মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তারাপদ আচার্য্যসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।