নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকদের উদ্দেশ্যে কঠোর হুশিয়ারী দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেছেন, কোন সংসদ সদস্য নয় একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলছি, যারা বঙ্গবন্ধুর নাম ভাঙ্গিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় বসাতে চাইছেন তাদেরকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। আর নারায়ণগঞ্জে যারা আমাদের সাথে মিশে স্বাধীনতার পক্ষের লেবাস ধরে বেঈমানী করবেন ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারী থেকে তাঁরা আর নারায়ণগঞ্জে থাকতে পারবে না।
শুক্রবার ৩০ নভেম্বর বিকেল ৪টায় চাষাঢ়া হীরামহলে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও তাদের কর্মীদের সাথে মত বিনিময় কালে সেলিম ওসমান এমন মন্তব্য করেন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, কামাল হোসেন দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল নায়ক মোস্তাক আহম্মেদের পর ড. কামালের মত দেশের সাথে এতো বড় বিশ্বাস ঘাতক আমি আর দেখি নাই। আজকে টেলিভিশনে চ্যানেল আই’য়ে প্রচারিত সংবাদ দেখে মনটা ভেঙ্গে গেল। দেখলাম জামায়াতে ইসলামীর ২০জনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা যারা বিএনপি করেন তারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে নয়। আপনারা জামায়াতের সাথে বন্ধুত্ব করেছেন। আপনাদের নেত্রী জেলে রয়েছেন। জিয়াউর রহমানের ছেলে বিদেশে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে উনি ডিজিটালের মাধ্যমে নমিনেশন দিচ্ছেন। আমার আসনে ৩জনকে ঠিক করা হয়েছে। গত সিটি কর্পোরেশনে তৈমূর সাহেব আমি উনাকে বড় ভাই বলে সম্বোধন করি। উনি বলে ছিলেন যে আমাকে গোসল করার সময় টুকু দেওয়া হলো না, আমাকে কোরবানী করে দেওয়া হলো। এবারে ৩জন রাখা হয়েছে ২ জনকে কোরবানী দেওয়া হবে। কাকে কোরবানী দেওয়া হবে পরে দেখা দেখতে পারবো।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, বিএনপিতে যারা আছেন অনেকে হয়তো আছে যারা স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেন উনারা হয়তো ওই ২০জনকে মনোনয়ন দেওয়ার কারনে উনারা নিজেরা মনোনয়ন নিবেন না।
তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশটা চলছে ডিজিটাল ফরমেটে। ডিজিটাল পদ্ধতি ছিল বলেই আমি বিদেশে বলে নমিশন দিতে পারছেন। কিন্তু আপনি তো ভুল করছেন। যাদেরকে রেখে আপনার মা জেলে গেছেন তারা কিন্তু আপনাদের চান না। তারা জামায়াতকে চায়, জামায়াতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। তাই তারা বেছে বেছে জামায়াতকে নমিশন দিচ্ছেন। তাই একেক জায়গায় তিন চার জন করে মনোননয়ন দিয়ে রাখছে।
আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপি আইনগত ভাবে বলতে বাধ্য হচ্ছে জামায়াত। যে ২০জনকে দেওয়া হয়েছে তাদের সবাই চিনে। কিন্তু যারা স্বাধীনতা বিরোধী এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদেরকে কিন্তু আমি আপনি নাও চিনতে পারি কিন্তু তারা ঠিকই চিনে। মনে রাখবেন তারা যাদের দিবেন তারাই স্বাধীনতা বিরোধী। তাই একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমার উপর আত্ম বিশ্বাস রেখেছেন। আর আমি আত্মবিশ্বাস রেখেছি আপনাদের উপর।
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে বিএনপির যারা আছেন যারা নাকি স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেন আপনারা এগিয়ে আসেন। আমরা আপনাদেকে ভুল বুঝবো না আমরা আপনাদের বিশ্বাস করতে চাই। বিশ্বাস ঘাতক নারায়ণগঞ্জে যেন না থাকে। এইবার যদি বিশ্বাস ঘাতকতা করছেন যতই আমি আপনাদের ভালবাসি না কেন সে যেই হোন না কেন ১ জানুয়ারীর পর একজন মুক্তিযোদ্ধা কোন অবস্থায় তাদের ছাড় দিবে না। দেশকে ক্ষতি করে মানুষকে ধোকা দিয়ে আমাদের সাথে ঢুকে গিয়ে শয়তানি করেন তাহলে মুক্তিযোদ্ধার থাবা চিনেন না। নারায়ণগঞ্জে আমি কিন্তু একা মুক্তিযোদ্ধা না। নারায়ণগঞ্জের সকল মুক্তিযোদ্ধারা জেগে গেছে। নতুন প্রজন্মের মাধ্যমে আপনাদের বিচার হবে। দেশের প্রতি আমারো এখনো দায়িত্ব আছে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহীন, আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি সহ দুটি ইউনিয়ন পরিষদের ২৪জন মেম্বার ও তাদের প্রায় ৫ শতাধিক কর্মীবৃন্দ সহ স্থানীয় গন্যামান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।