নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার বাইতুল সালাম জামে মসজিদে ভয়াবহ দূর্ঘটনাটা আমার কাছে একদিকে যেমন মর্মান্তিক, বেদনাদায়ক, কস্টের আরেকদিকে রাগের, ক্ষোভের বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাশুকুল ইসলাম রাজিবের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেয়া ষ্টেটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো।
রাজিব লিখেন ‘দায়িত্বহীনতার আর দায়িত্ব পালনে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারিদের অসাধুপায়ে অর্থ উপার্জন করার সবরকমের মানবিকতা বিবর্জিত কুরুচিপূর্ণ মানুষিকতার জলন্ত উদাহরন এই ঘটনা।৫০ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়াতে গ্যাসের লাইনের লিকেজ না ঠিক করার বলি হলো এতগুলো নিরাপরাধ মানুষ।
এই দায় কার? প্রশ্নটা খুব কমন আর উত্তর টাও কমন যদিও এই কমন বিষয়টা না মানতেই আমার লিখাটা।
একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে আমি আমার অধিকার আদায়ে সচেস্ট বা সচেতন কি?একজন নাগরিক হিসেবে আমার স্বাস্থ্যসেবা,জীবনের নিরাপত্তা, স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা,আইনের সেবা, শিক্ষার সুব্যবস্থা পাওয়ার অধিকার আমার আছে কি?আর এগুলে না পেলে নাগরিক হিসেবে আমার ভুমিকা কি?
নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চল জেলা হিসেবে পরিচিত হলেও এ জেলার স্বাস্থ্যসেবা কি পর্যায়ে আছে তা আমরা সবাই জানি।কোন দূর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা দিতেও এ জেলার হসপিটাল গুলে ব্যর্থ।তাদের চিকিৎসা একটাই ঢাকা নিয়ে যান।এক্ষেত্রে নাগরিক হিসেবে কখনোই আমরা এর প্রতিবাদ বা আমাদের অধিকার আদায়ে সচেস্ট হইনি।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের একটি ঘটনা এক মেয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। মেয়েটির বাবা মা মেয়ে নিখোজ এই মর্মে থানায় অভিযোগ করেছে। পুলিশ এই মর্মে মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে আসামী ধরে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করেছে।অথচ কয়দিন পর দেখা গেলো মেয়েটি সংসার করছে স্বামীর সাথে।তাহলে যার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করলো সেটা কোন উপায়ে তাহলে কোথায় আজকে নিরাপত্তা বা আইনের শাসন। আর কিভাবে এরা এগুলো করার সাহস পায় কাদের নিস্ক্রিয়তার কারনে সেটা ভাবার সময় এখনই।
কিছুদিন আগে একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর কে বিনা অপরাধে মাতাল পুলিশ গুলি করে মেরে ফেললো। তাহলে স্বাভাবিক মৃত্যর নিশ্চয়তা কোথায়?
একই মামলার আসামী রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবি সহ সবাই।জামিন দেয়া হয় আইনজীবীদের আইনজীবী বলে অন্যদের দেয়া হয়না। তাহলে আইন সবার জন্য সমান একথাটা যেমন সত্য নয় তেমনি এই আইন সবার জন্য সমান এটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের কি ভুমিকা? আমরা সেটা কি করেছি?
এরকম হাজারো অসংগতি আজ সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে।দূর্নীতী,অন্যায়, অনিয়ম,লুটপাট যাদের রুখবার কথা আজ তারাই সেটা করছে অবলিলায় আর সেটা করার সুযোগ করে দিয়েছি প্রতিনিয়ত দিচ্ছি আমরাই।বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ২০০৬ পর্যন্ত যে বিদুৎ উৎপাদন করার খরচ ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে প্রায় ৩ টাকা পড়তো তা আজকে ১৪ টাকা পড়ে আমরা চুপ রয়েছি,১৫/২০ টাকার চাল ৫০ /৬০ টাকায় খাই চুপ রয়েছি,বাস ভাড়া ১৫ টাকার টা ৬০ হয়ে গেছে চুপ থেকেছি এরকম বলতে গেলে সারারাত শেষ হবেনা। এগুলো সব সম্ভব হয়েছে আমাদের নিস্ক্রিয়তার জন্য।আমাদের অধিকার আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে এই মনোভাব থেকে সরে আসার জন্য।
সবাই আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর উপর দোষ চাপিয়ে নিজেকে নিজের দায়িত্ব থেকে দূরে সরিয়ে তৃপ্ত থাকি হয়তো তবে এর পরিনাম কখনো সুখকর হবেনা।এটা হয়তো ঠিক বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো তাদের আদর্শ থেকে দূরে সরে কিছু অন্যায় সুবিধা বহাল রাখার জন্য এরকম হাজারো অন্যায় করার সুযোগ করে দিচ্ছে রাস্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোকে যার মাশুল গুনতে হচ্ছে পালাক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোকে আর এদেশের আপামর সব নাগরিকদের।রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনার উর্ধে উঠে প্রত্যেক নাগরিকের উচিত তার অধিকার আদায়ে সচেস্ট ও সচেতন হওয়া।তাহলে হয়তে এরকম অপমৃত্যু এড়ানো যাবে।আগমীতে আর এরকম কিছু দেখতে হবেনা এই প্রত্যাশা করতে চাই আর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি যাতে উনাদের বেহেশত নসীব করেন।