নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলাধীন ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীতে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ফকির এপারেলসের পর এবার উৎপাদন মজুরী বৃদ্ধির দাবীতে এন আর গার্মেন্ট শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে ফের রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল কাশীপুর ইউনিয়নের ভোলাইল সড়ক।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকের হামলা, ভাঙচুর ও বিক্ষোভের কারনে সকাল ৯ টা থেকে বন্ধ থাকে ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়ক।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ চালালে উভয়পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় দু’পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন।
সকাল ১১ টায় কাশীপুরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনী উঠান বৈঠকে যোগ দিতে এসে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের এমপি শামীম ওসমান এমন শ্রমিক অসন্তোষ দেখে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
তিনি তখন বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে এন আর গার্মেন্টে প্রবেশ করে বিক্ষোভের ব্যাপারে খোঁজ নেন। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর ঠিক এরআগ মুহুর্তেই বহিরাগত শ্রমিক নামধারী নেতারা পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলতে উস্কানী দিয়ে শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে অর্থনীতিকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে।
শামীম ওসমান আরও বলেন, শ্রমিকদের দাবী থাকতে পারে। এটি পুরণের জন্য মালিকপক্ষ, বিকেএমইএ, প্রশাসন রয়েছে। কিন্তু কারো সাথে কোনরূপ আলোচনায় না বসে এভাবে শ্রমিকদের রাস্তায় নেমে এসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গাড়ীতে হামলা, ভাঙচুর চালানোটা আমার কাছে ষড়যন্ত্রেরই অংশ মনে হচ্ছে।
কিন্তু এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে যেন শ্রমিকরা পা না দেয় সেজন্য আন্দোলনরত শ্রমিকদের কারো উস্কানীতে কান না দেয়ার অনুরোধ জানান শামীম ওসমান। পরে শামীম ওসমানের নির্দেশনা মোতাবেক মালিকপক্ষ অন্যান্য গার্মেন্টেস এর ন্যায় উৎপাদন মজুরী বৃদ্ধির আশ^াস দিলে শ্রমিকরা কারখানায় ফিরে যান
এসময় তাঁর সাথে ছিলেন বিকেএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো: মঞ্জুর কাদের পিপিএমসহ গার্মেন্ট মালিক কৃর্তপক্ষ।
এব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজালাল জানান, এন আর শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশসহ প্রায় ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু ঐসময়ই শ্রমিকরা পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের গ্যাসে এক বয়স্ক নারী শ্রমিকের মৃত্যুর দাবী করলেও তখন পুলিশ তা অস্বীকার করেন। তবে দুপুরে নারী শ্রমিকের মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত হয়ে পুলিশ দাবী করেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ভয়ে স্ট্রোক করে নারী শ্রমিকটি মারা গেছেন।