নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার আলী সাহার্দী এলাকায় পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার বর্ষা হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
শনিবার ( ১৪ সেপ্টেম্বর ) সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়।
মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে এতে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী, লিগাল এইড সম্পাদক শাহানারা বেগম, আন্দোলন সম্পাদক শোভা সাহা, জাগো হিন্দু পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কাজল সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নিহত বর্ষার মা শিউলী বেগম, বাবা মনজুর ভূঁইয়া, ছোট বোন সাবরিনা সুলতানা মিম, সাড়ে চার বছরের কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস নিজহার সহ শতাধিক এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে নিহত বর্ষার মা শিউলি বেগম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন সহ প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হলেও আসামীপক্ষ এটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ পঁচিশ দিন পেরিয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ময়না তদন্ত প্রতিবেদন না দেয়ায় আসামীপক্ষ সেই সুযোগ নিচ্ছে।
নিহত বর্ষার বাবা মনজুর ভূঁইয়া বলেন, আমার মেয়ের হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টাসহ ময়না তদন্ত প্রতিবেদন যাতে সঠিকভাবে দেয়া না হয় সেজন্য চেষ্টা তদবিরসহ প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করছে ঘাতক নয়নের পরিবার। এর পাশাপাশি মামলা তুলে নিতেও আসামীপক্ষ আমাদেরকে নানাভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। নিহত বর্ষার পরিবারের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সহ ন্যায়বিচার দাবি করেন।
মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জ মহিলা পরিষদের সভাপতি লক্ষী চক্রবর্তী বলেন, বর্ষার হত্যার বিচার নিয়ে কোন প্রহসন মেনে নেয়া হবে না। তিনি সঠিক তদন্ত করে আসামীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। যদি এর বাইরের কোন ব্যত্যয় ঘটে, ময়না তদন্ত রিপোর্ট যদি সঠিক ও নিরপেক্ষভাবে দাখিল করা না হয়ে তবে মহিলা পরিষদ সিভিল সার্জন সহ সংশ্লিষ্টদের রিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।
নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হওয়ার কারনে নারায়নগঞ্জে একের পর এক নারী ও শিশু হত্যা, ধর্ষণ এবং নিযাতন বেড়েই চলেছে। তারই বলি হয়েছে বন্দরের গৃহবধৃ বর্ষা। তিনি বলেন, সরকার যৌতুকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রনয়ন করলেও এর বাস্তাবায়ন হচ্ছে না। তিনি দ্রুুত বর্ষা হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
গত ১৯ আগস্ট রাতে বন্দর উপজেলার আলী সাহারদী এলাকায় যৌতুকের দাবিতে শ্বশুর বাড়িতে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বর্ষাকে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ষার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান নয়নকে হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই তাকে গ্রেফতার করে।