নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদ বলেছেন, ‘আমরা প্রতিটি উৎসবকে নিজের মনে করেছি। এবার দূর্গো পূজোয় প্রতিটি পূজো মন্ডপে গিয়েছি। সেখানকার পরিবেশ সুন্দর রাখতে কাজ করেছি। সমাজের প্রতি স্তরে যে ধর্মের মানুষই রয়েছে, সকলেরই মূল বাণী হচ্ছে অন্যায়, অবিচার, অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে দ্বীপ জ্বালানো। আমরা সুন্দর সমাজের প্রত্যয়ে দ্বীপ জ্বালাবো।’
সোমবার ( ২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শ্যামা পূজো উপলক্ষ্যে শহরের নতুন পালপাড়ায় বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ একটি সম্প্রীতির শহর। ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১’র মহান মুক্তিযোদ্ধ, প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই জেলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই জেলার যেমন ভালো ইতিহাস রয়েছে, তেমনি কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি নারায়ণগঞ্জের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার। আমরা এখানে চিরদিন থাকবো না। তবে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য ধরে রাখার দায়িত্ব নারায়ণগঞ্জবাসীর।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, মাদকে উঠতি বয়সের সন্তানেরা নষ্ট হচ্ছে। নারীরা ধর্ষিত হচ্ছে। আমরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। ইভটিজারদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম। কেবলমাত্র পুলিশের দ্বারাই সমাজের সকল অপরাধ নিরাময় করা সম্ভব নয়। এরজন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুললে সমাজ থেকে অপরাধীরা পালিয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, একসময় ঢাকায় অনেক গডফাদার ছিল। যারা সকলেই এখন আইনের আওতায় এসেছে। নারায়ণগঞ্জেও অনেক অপরাধী জেলে গেছে। অনেকের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। দ্বীপাবলির আলোয় সমাজের সকল অন্ধকার আলোকিত হবে। তবে উদ্দেশ্য থাকতে হবে সৎ।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা হিন্দুধর্মাবলম্বীরা প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারছি। এই সরকার আমাদের কেবল প্রশাসনিক ভাবেই নয়, সুন্দর ভাবে পূজোর অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে আর্থিক ভাবেও সহায়তা করে আসছে। এই জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। একই সাথে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ যেভাবে আমাদের সহযোগীতা করে আসছেন, তিনি নিজে পূজো মন্ডপগুলোতে উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করছেন, এটি আমাদের জন্য বড় একটি পাওয়া। আমরা গর্বিত ওনার মতো একজন পুলিশ সুপার পেয়ে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) নুরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুভাষ সাহা, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, নাসিক ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাস, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুণ কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম সাহা, জেলা হিন্দু সংস্কার সমিতির সভাপতি কমলেশ সাহা, পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা রিপন ভাওয়াল, সুশীল দাস, তপন ঘোপ সাধু, কৃষ্ণ আচার্য, বন্দর কমিটির সভাপতি শংকর কুমার দাশ, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, সিদ্ধিরগঞ্জ কমিটির সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, ফতুল্লা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অরুণ কুমার দাস প্রমুখ ।