নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
অবশেষে গ্রুপিং ভেঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজনে সফল হয়েছে মহানগর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বিগত দিনগুলোতে বিভিন্ন বলয়ে বিভক্ত মহানগর ছাত্রদল নেতাকর্মীদেরকে এদিন একমঞ্চে দেখা গেছে। তাদের এমন ঐক্যে অভিভূত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি’র শীর্ষ নেতারা। একই সাথে এমন আয়োজনে বিএনপি ছাড়াও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কাছে প্রশংসিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
শনিবার ( ১ জুন ) বিকেলে নগরীর হোসিয়ারি সমিতি ভবন মিলনায়তনে এমন চিত্র দেখা যায়। এদিন জেলা ও মহানগর বিএনপি’র একাধিক শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহেদ আহম্মেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ এড.আবুল কালাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কালাম বলেন, ব্যাক্তিকেন্দ্রীক রাজনীতির ফলে বর্তমানে শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতি বিলীন হয়ে গেছে। দেশে এমনিতেই গণতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে গেছে। রাজনৈতিক অবক্ষয় তরুণদের রাজনীতি খেয়ে ফেলেছে। গোটা দেশে চলছে দুর্নীতি ও একদলীয় শাসন। সরকার এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে আত্মবিকাশ করার সুযোগ নেই। তাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার অন্য কোন বিকল্প নেই।
মহানগর ছাত্রদলের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, ২০০৬ সালের পর দীর্ঘ ১৩ বছরেরও আজকের অনুষ্ঠানের মতো এতে বড় অনুষ্ঠান জেলা কিংবা মহানগর দলের নেতৃবৃন্দ আয়োজন করতে পারেনি। যেটি করে দেখিয়েছে মহানগর ছাত্রদল। তারা একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। আমাদের নেতারা শুধু বিভিন্ন বলয় তৈরি করে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করে মুখে বড় বুলি আওরায়। কিন্তু ছাত্রদল নেতারা দেখিয়ে দিলো ঐক্য কাকে বলে।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, আমরা যেটি পারিনি মহানগর ছাত্রদল তা করে দেখিয়েছে। একই মঞ্চে সকলকে এনে তারা বসিয়েছে। তাদের নিয়েই শুরু হবে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার আন্দোলন।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব বলেন, জিয়াউর রহমান সারাবিশ্বে নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করছেন। ওআইসি, সার্ক তৈরিতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের অবদানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিশ্বে বিভিন্ন স্থাপনা ও রাস্তার নামকরণ তাঁর নামে করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির যে কোন সংগঠনের চেয়ে মহানগর ছাত্রদল শক্তিশালী। বড়রা গাইড করলে ছাত্রদল আরো ভালো কিছু করতে পারবে।
মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, এখন আর বক্তৃতা দিতে ভালো লাগে না। ক্যানভাসের মতো লাগে। বক্তব্যে সবাই অনেক কিছু করতে চাই বলে গলা ফাটান, কিন্তু বাস্তবে কিছু করতে চাননা। আজ এই অনুষ্ঠানে যত ছাত্রদল নেতাকর্মী উপস্থিত আছেন তারা যদি রাজপথে উপস্থিত থাকতো তাহলে অনেক আগেই নেত্রীর মুক্তি হতো। রাজপথে আমরা কোন লোক পাইনা। সিনিয়র নেতা বিভিন্ন অংগ সংগঠন নাম দিয়ে যা খুশি তা করছেন। এর জন্য কেন্দ্রীয় নেতারাই দায়ী। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দও নানা উস্কানি দিয়ে রাজনীতির পরিস্থিতি নষ্ট করছেন। নিজের লোক, নিজের বলয়ের লোক নিয়ে কমিটি করে দলীয় জায়গা দখল করেন। আমি বলতে চাই এমন করলে একদিন নিজেদের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। এসব বাদ দিয়ে বিএনপি’র সার্বজনীন কমিটি গঠন করতে হবে।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউসার আশা বলেন, দেশনেত্রী কারাগারে, তারেক রহমান নানা ষড়যন্ত্রের মধ্যে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পাওয়ার লক্ষে কাজ না করে অনেকে দলে গ্রুপিং তৈরি করায় ব্যস্ত রয়েছেন। জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রদলে যদি কেউ গ্রুপিং তৈরি করতে চান তবে সেটি সহ্য করা হবেনা।
সভাপতির বক্তব্যে শাহেদ আহম্মেদ বলেন, আমরা চাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। আমরা কোথাও কোন গ্রুপিং চাইনা। সহযোগিতা করুন আর সেটি না পারলে দয়া করে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেননা। এতে নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হয়।
মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম মজনু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি, মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রাফিউদ্দিন রিয়াদ সহ-সভাপতি দর্পণ প্রধান সহ প্রমূখ।