নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ: বন্দরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দ্বন্দের জেরে মেরাজুল ইসলাম (২৮) খুনের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহীন মিয়াকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের মা নাসরিন বেগম। মামলায় কাউন্সিলরসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরো ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাতে নিহত মেরাজুলের মা নাছরীন বেগম বাদী হয়ে বন্দর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় কাউন্সিলরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- বন্দরের চিনারদী এলাকার শাহ্ আলমের ছেলে আকিব হাসান রাজু ওরফে বা চুইল্লা রাজু (৩৪), ছালেহনগর এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে সোহেব ওরফে সৌরভ (২৮), নূর হোসেনের দুই ছেলে সাখাওয়াাত হোসেন পিংকি (৩৮) ও বাবু (৪৫), আব্দুল জলিলের ছেলে ফয়সাল ওরফে রবিন (৩০), মৃত শামসুদ্দিন প্রধানের ছেলে কাজল প্রধান (৪৮), মৃত মুছা মিয়ার ছেলে মাসুদ ওরফে মাইচ্ছা (৪৮), তোতা মিয়ার ছেলে নাদিম (৩৭), রূপালী আবাসিক এলাকার বাকি মিয়ার ছেলে মানিক (৩৫), একই এলাকার মৃত সোয়েব আলী বেপারীর ছেলে আব্দুর রব (৫৫), মৃত মুছা মিয়ার ছেলে স্বপন (৪৮), সোবহান মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন বিল্লু (৩৩), মৃত কুদ্দুস মিয়ার ছেলে রানা ওরফে কাইল্লা রানা (৩২)।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তার বড় ছেলে মেরাজুল ইসলাম (২৮) তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান আয়মান ইঞ্জিনিয়ারিং এ অবস্থানের সময় আসামিরা পূর্ব শত্রুতার জেরে দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ হামলা করে। স্থানীয় কাউন্সিলর শাহীন মিয়ার হুকুমে আকিব হাসান রাজু তার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াাল দিয়ে বাদীর ছেলেকে হত্যার উদ্দেশে হাতে-পায়ে ও মাথায় এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। মামলার অন্য আসামিরাও আঘাত করে মেরাজুলকে মাটিতে ফেলে দেয়। তখন আকিব হাসান রাজু তার হাতে থাকা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য মেরাজুলের পেটে কোপ দিয়ে নাড়ি-ভুড়ি বের করে ফেলে।
বাদী মামলায় আরও বলেন, মেরাজুলকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তার বন্ধু আল আমিনকেও কোপায় আসামিরা। আসামিরা আহতদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে পেটে, পিঠে, বুকে কিলঘুষি ও লাথি মারে। আহত দু’জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেরাজুলকে রাত সোয়া নয়টার দিকে মৃত ঘোষণা করে৷
এ মামলায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা। এ মামলায় আব্দুর রব ও স্বপন নামে এজাহারনামীয় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে৷
এদিকে এই হামলার ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলর শাহীন মিয়া। বুধবার ভোররাতে নিজের ফেসবুক ভেরিফাই পেইজ থেকে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার কোন আত্মীয়-স্বজন এ ঘটনায় জড়িত থাকলে তাদের শান্তি দাবি করছি৷ কিন্তু আমাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তিনি স্থানীয় সাংসদ ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে এ মামলা থেকে অব্যহতির অনুরোধ প্রকাশ করেন।