নারায়ণগঞ্জের কন্ঠ:
শহরের আল জয়নাল ট্রেড সেন্টারের মালিক জয়নাল আবেদীন কর্তৃক নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের জায়গা দখলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং সমাধানের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়ার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে তারা।
বুধবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের বাম পাশে মূল গেইটের পাশে পাঁচ শতাংশ খালি জায়গা উদ্ধারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা অবৈধভাবে গড়ে উঠা টিনের স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়। শিল্পপতি ও জাতীয় পার্টি নেতা জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীণ এজে ডেভেলোপার এন্ড হাউজিং লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ কলেজের জায়গা দখলের।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২০ নভেম্বর লোকজন নিয়ে মো.জয়নাল আবেদীনের নামে একটি সাইন বোর্ড স্থাপন করেন। তা দেখতে পেয়ে কলেজের ছাত্রীরা সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলে। এরই ধারাবাহিকতায় ওইদিনই নারায়ণগঞ্জের ৪র্থ সিনিয়ল জেলা জজ আদালতে দেওয়ানী মোকাদ্দমা নং-৫০/২০১৮ মামলা দায়ের করা হয়। এক্ষেত্রে মো.জয়নাল আবেদীনসহ ৫ জন বাদী হয়ে সরকারি মহিলা কলেজ অধ্যক্ষসহ ৩ জনকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করা হয়।
বাদী জয়নাল আবেদীন মামলায় আবেদীন তাঁর প্রেরিত অ্যাডভোকেট নুরুন নাহারসহ ২০/২৫ জন লোকজন নিয়ে কলেজ প্রধাণ গেইটের অভ্যন্তরে উল্লেখিত ৫ শতাংশ খালি জায়গায় এ.জে ডেভেলোপার এন্ড হাউজিং লিমিটেডের পক্ষে ২ টি সাইন বোর্ড স্থাপন করে ও চারদিকে টিনের ঘেরাও দিয়ে জায়গাটি দখল করে নেয় এবং কলেজের ছাত্রীদের চলাচলে বিঘœ ঘটিয়ে পথটি রুদ্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয় এই জায়গাটিতে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ নির্মিত বসার জায়গাগুলো টিন দিয়ে ঘিরে ফেলে। ফলে দশ হাজার ছাত্রী এবং তাদের ছাত্রী ও অভিভাবকদের বসার জায়গাটি বন্ধ হয়ে যায়।
এমনকি এ ঘটনার সাথে আমাদের অধ্যক্ষ মহোদয়কে সংশ্লিষ্ট করে তাঁর নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক এবং ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে ছাত্রী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ভীতি ও আশংকার সৃষ্টি করেছেন । জয়নাল আবেদীন এহেন অরাজকতাপূর্ণ আচরণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভিতর আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে যা মহিলা কলেজের শিক্ষার অগ্রযাত্রাকে বাঁধাগ্রস্থ করছে ।
এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কলেজে যাতায়াতের অসুবিধা দুরীকরণসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে পীর বাবুর মাজারের দখলকৃত সরকারি খাস জমিসহ কলেজের রোকেয়া ভবনের বাম পাশের প্রধাণ ফটাকের সামনে এ.জে ডেভেলোপার এন্ড হাউজিং লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন দখলকৃত খালি জায়গার কলেজের নামে বন্দোবস্ত দেয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্মারকলিপি পেশ করছি।
এদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা সমাধানে মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বেদৌড়া বিনতে হাবিব না এসে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীকে দিয়ে স্মারকলিপি পেশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক রাব্বী মিয়া।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সমস্যাটাতো প্রাতিষ্ঠানিক, তোমরা কেন এসেছো? কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অথচ তিনি আমার সাথে যোগাযোগ না করে তোমাদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছে। অধ্যক্ষের উচিত ছিল আজ আমার সাথে আগে দেখা করে সমস্যা জানানো। তিনি আসার পর যদি আমি সমাধান করতে না পারতাম তাহলে পরবর্তীতে তোমাদের পাঠাতে পারতেন। কিন্তু অধ্যক্ষ সেটা না করে তোমাদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছেন।’